বিবাদী বাগ চত্বরে দ্রুত ট্রাম পরিষেবা স্বাভাবিক করার দাবি নিয়ে মহাকরণ স্টেশন চত্বরে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখালেন ট্রামপ্রেমী সংগঠনের সদস্যরা। ডালহৌসি চত্বরে মেট্রোর স্টেশন তৈরির কাজ শেষ হয়েছে বহু আগেই। আর চালু হয়েছে গঙ্গার তলা দিয়ে মেট্রো পরিষেবা। কিন্তু মেট্রোর কাজের জন্য বিবাদী বাগ থেকে বন্ধ হয়ে যাওয়া ট্রাম পুনরায় চালু হয়নি। এখান থেকে একদা চারটি রুটে ট্রাম চলত। কিন্তু সেসব এখন স্মৃতি। এবার বন্ধ হওয়া কমপক্ষে তিনটি রুটে ট্রাম চালুর দাবি নিয়ে বিবাদী বাগে সমাবেশ করল ট্রামপ্রেমী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
এদিকে ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রোর পরিকাঠামো তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর বিবাদী বাগে ট্রাম ও বাস টার্মিনাসের জমি ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে আগে জানিয়েছিল কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। মেট্রোর নির্মাণ সম্পূর্ণ হয়েছে। মহাকরণ স্টেশন দিয়ে ট্রেন যাতায়াত করছে। কিন্তু মাটির উপরে টার্মিনাসের জমি ফেরেনি বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম ও বাস পরিষেবা ওখান থেকে শুরু করার কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। ট্রামপ্রেমী সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই এলাকা থেকে মিনি বাসস্ট্যান্ড এবং ট্রাম সরানোর জন্য পরিবহণ দফতরকে ক্ষতিপূরণও দেয় মেট্রো। কিন্তু পরিবহণ দফতর পুনরায় ট্রাম ফেরানোর বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। ফলে হারাচ্ছে নস্টালজিয়া।
আরও পড়ুন: বিডিও’র পাসওয়ার্ড হ্যাক করে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ, ধৃত বিজেপি নেতা সহ তিন
অন্যদিকে আগে বিবাদী বাগ থেকে শ্যামবাজার, গ্যালিফ স্ট্রিট, রাজাবাজার হয়ে নানা রুটে ট্রাম চলত। কমবেশি সাত–আটটি রুট চালু ছিল। ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ করার জন্য মেট্রো কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ১১ কোটি টাকার বেশি ট্রাম সংস্থাকে দিয়েছিল। ট্রামপ্রেমী সংগঠনের প্রতিনিধিরা জানান, লাইন পাতার জন্য আট মাস আগে টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। কিন্তু এখন কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে। এই বিষয়ে পরিবহণ নিগম পুলিশের আপত্তির কথা জানিয়েছে সংগঠনের সদস্যদের। তাই বিবাদী বাগ থেকে ট্রাম চলাচল আবার চালু বেশ কঠিন কাজ।
এখন ট্রাম ফেরানোর দাবি জানাতে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। আর তার নেতৃত্বে আছেন কলকাতা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভাপতি দেবাশিস ভট্টাচার্য। এই বিষয়ে দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘ট্রামলাইন পাতার মতো জমি রেখে দিয়েছে মেট্রো। পরিবহণ দফতরের পক্ষ থেকে কোনওরকম উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। তাঁরা জানান, উত্তর কলকাতায় ট্রাম চালু সম্ভব নয়।’ কলকাতা শহরে ট্রাম ফেরাতে উদ্যোগ নিতে বলেছে কলকাতা হাইকোর্ট। তবে ট্রাম চালু করলে শহরে যানজট হবে। এই যুক্তি দেখাচ্ছে কলকাতা পুলিশ। তাই জট কাটছে না বলে অভিযোগ।