যবনিকা পড়ল না কেন্দ্র ও রাজ্যের দ্বৈরথে। বরং রাজ্যের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে শো-কজ করল কেন্দ্র। তাঁর বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা তিনদিনের মধ্যে জানতে চাওয়া হল। নবান্ন সূত্রে খবর, শো-কজের জবাব দেবেন আলাপনবাবু।
কেন্দ্রের চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, আকাশপথে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনের পর কলাইকুন্ডা বায়ুঘাঁটিতে পৌঁছেছিলেন মোদী। সেখানে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এবং মুখ্যসচিবের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠকের বিষয়টি আগে থেকেই ঠিক ছিল। কিন্তু কলাইকুন্ডায় পৌঁছানোর পর রাজ্যের প্রতিনিধিদের জন্য মোদীকে ১৫ মিনিটের মতো অপেক্ষা করতে হয়। এক আধিকারিক বাংলার মুখ্যসচিবের থেকে জানতে চান, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধিরা বৈঠকে যোগ দিতে চান কিনা। তারপর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আসেন মুখ্যসচিব। সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে চলেও যান।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে কেন্দ্রের পাঠানো চিঠিতে আলাপনবাবুকে বাংলার মুখ্যসচিব হিসেবেই উল্লেখ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে আলাপনের বদলি-ইস্যুতে যে কেন্দ্র হাল ছাড়ছে না, তা বুঝিয়ে চিঠিতে লেখা হয়েছে, কলাইকুন্ডায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস নিয়ে প্রধানমন্ত্রী তথা জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের প্রধান নরেন্দ্র মোদীর পর্যালোচনা বৈঠকে উপস্থিত না থেকে ২০০৫ সালের বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের ৫১ (বি) ধারা লঙ্ঘন করেছেন আলাপনবাবু। সেই আইন ভঙ্গের জন্য কেন তাঁর বিরুদ্ধে কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সেই ব্যাখ্যা চেয়েছে কেন্দ্র। সেই উত্তর আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নবান্ন সূত্রে খবর, শো-কজের জবাব দেবেন আলাপনবাবু। যিনি মঙ্গলবারই মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। সঙ্গে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (এটিআই) ডিরেক্টরের দায়িত্বও সামলাবেন। রাজ্যের আমলা মহলের মতে, নিজের কর্মজীবনের শেষদিনে অবসর নিয়ে কেন্দ্রের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গিয়েছেন আলাপনবাবু।
যদিও নাম গোপন রাখার শর্তে ইতিমধ্যে এক কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে আলাপনবাবুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। তিনি বলেছেন, ‘আলাপনবাবুকে শো-কজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নির্দেশ অমান্য করার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার ভাবনাচিন্তা করছে কেন্দ্রের কর্মীবর্গ ও প্রশিক্ষণ দফতর।’