সম্প্রতি স্বাস্থ্য দফতরের একটি রিপোর্ট জমা পড়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে। সেখানে রোগী রেফার করা নিয়ে নানা অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছিল। জেলার হাসপাতালগুলি থেকে রোগী ‘রেফার’ করা হচ্ছে আকছার। যার জেরে মাশুল গুনতে হয় রোগীর পরিবারকে। কলকাতায় এসে নানা হাসপাতালে ঘুরে বেড়াতে হয়। তাতে বাড়ে অ্যাম্বুলেন্সের বিল। এমনকী চিকিৎসায় দেরি হওয়ায় রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে। এই রিপোর্ট হাতে পেয়ে জেলার হাসপাতালগুলির ‘রেফার’ রোগ তাড়াতে কড়া ওষুধ দিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ঠিক কী নির্দেশ দিয়েছেন তিনি? নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য দফতরকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, অবিলম্বে এই রেফার বন্ধ করতে হবে। বিশেষ জরুরি ছাড়া অযথা রোগীকে হয়রান করা যাবে না। এই কথা জেলা হাসপাতালগুলিকে জানিয়ে দিতেও বলা হয়েছে। আর তারপরই জেলা হাসপাতালগুলিকে চিঠি দিয়ে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়ে দিয়েছে, অহেতুক রোগী রেফার করা যাবে না। গত এক দশকে রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো বেড়েছে। প্রতিটি জেলায় অন্তত একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রয়েছে। সিসিইউ এবং এইচডিইউ বেডও বেড়েছে। তাই রোগীকে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে হবে।
কেন এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে? স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, জেলা থেকে রেফার হতে থাকলে কলকাতার সরকারি হাসপাতালগুলির উপর চাপ বাড়ছে। এই রেফারের জেরে রোগীর পরিবারকে হয়রান হতে হচ্ছে। এমনকী রোগী মারা পর্যন্ত যাচ্ছে। এই গোটা বিষয়টি ঠেকাতেই রিপোর্ট পেশ করা হয়েছিল। যা দেখে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমকা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রেফার নিয়ে কী সিদ্ধান্ত হয়েছিল? স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বড় হাসপাতালগুলিতে ৭ শতাংশের বেশি রোগীকে রেফার করা যাবে না বলে ঠিক হয়। লামা কেস থাকতে হবে ৩ শতাংশের কম। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ৩৯টি হাসপাতাল ৭ শতাংশের বেশি রোগীকে রেফার করেছে। তার মধ্যে ২০টি হাসপাতাল ১০ শতাংশের বেশি রোগীকে রেফার করেছে। এমনকী ৫০টি হাসপাতালে ৩ শতাংশের বেশি রোগীকে মেডিকেল অ্যাডভাইজ দিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। ১৯টি হাসপাতালে লামা কেস ১৯ শতাংশ। লামা কী? এটি হল, লিভিং এগেইনস্ট মেডিক্যাল অ্যাডভাইস।