ইতিমধ্যেই বাইরে থেকে আসা দুই ব্যক্তির শরীরে মিলেছে করোনা সংক্রমণ। তার উপর আজ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে ভারত–ব্রিটেন উড়ান। এই পরিস্থিতিতে এবার মেট্রো রেলের কর্মীদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার খবর মিলেছে। তবে এটা আশঙ্কা করা হয়েছিল নিউ নর্মালে মেট্রো চালু হওয়ার পরই। সেই আশঙ্কাই সত্যি হওয়ায় জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এটা ঠিক, মেট্রো পরিষেবা শুরু হওয়ার পরে শহরে সেভাবে করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত দেখা যায়নি। কিন্তু মেট্রোর কর্মীদের মধ্যে সংক্রমিতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। পুজোর পর থেকে গত দু’মাসের মধ্যে মহাত্মা গান্ধী রোড, চাঁদনি চক, রবীন্দ্র সদন, নেতাজি ভবন, কালীঘাট, মহানায়ক উত্তমকুমার, কবি নজরুল–সহ একাধিক স্টেশনের কর্মীদের সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। কয়েকটি স্টেশনে অল্প সময়ের ব্যবধানে একাধিক কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। সংক্রমণের আশঙ্কায় মেট্রোর কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।
মেট্রো সূত্রে খবর, সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ছে বলে কয়েকটি ক্ষেত্রে স্টেশনের দৈনন্দিন কাজকর্ম চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে। কারণ আক্রান্তদের মধ্যে বিভিন্ন স্টেশনের সুপার, স্টেশন মাস্টার পদমর্যাদার আধিকারিকদের পাশাপাশি কমার্শিয়াল পোর্টারেরাও রয়েছেন। সংক্রমিতেরা ছুটিতে গেলে একাধিক কর্মীকে বাড়তি কাজের চাপ নিতে হচ্ছে।
এদিকে নেতাজি ভবন, কালীঘাট এবং মহানায়ক উত্তমকুমার স্টেশনে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে সূত্রের খবর। কিছু ক্ষেত্রে কর্মী সংখ্যা কমার কারণে বিধি মেনে সংক্রমিতদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের আইসোলেশনে পাঠানোও সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
অন্যদিকে মেট্রোর কর্মীরা ছাড়াও আরপিএফ বা রেল রক্ষী বাহিনীর কর্মীদের মধ্যে সংক্রমণের হারও যথেষ্ট বেশি। পার্ক স্ট্রিটের মেট্রো ভবনেও প্রায় সব ক’টি তলেই কর্মীদের মধ্যে সংক্রমণের ঘটনা সামনে এসেছে। তাঁদের মধ্যে অনেকের করোনা পরবর্তী অসুস্থতাও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
মেট্রো সূত্রে খবর, বিভিন্ন স্টেশনে আরপিএফ জওয়ান, স্টেশন মাস্টার, কমার্শিয়াল পোর্টার এবং সাফাই–কর্মীদের মধ্যে সংক্রমণের হার বেশি। তুলনায় টিকিট কাউন্টারের কর্মী, প্যানেল অপারেটরদের মধ্যে সংক্রমণের হার কম।
উল্লেখ্য, গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে মেট্রো পরিষেবা শুরু হওয়ার পরে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০০ জন কর্মী সংক্রমিত হয়েছেন। কয়েকজনের মৃত্যুও ঘটেছে। কলকাতা মেট্রোয় আইএনটিটিইউসি’র কর্মী সংগঠন বিষয়টি নিয়ে একাধিক চিঠি দিলেও কর্তৃপক্ষ তেমন সদর্থক পদক্ষেপ করেননি বলে অভিযোগ। এক মেট্রো কর্তা বলেন, ‘যেমন সংক্রমিত হচ্ছেন, তেমনই সামগ্রিক বিচারে সংক্রমণ কমছেও। দ্রুত উন্নতি হবে আশা রাখছি।’ এখন শীত পড়ায় শহরে মানুষ বেশি বেরোচ্ছে। আবার সামনে বড়দিন তাই কেনাকাটা করতে মানুষের ভিড় দেখা যাচ্ছে। মেট্রো রেলেও ভিড় বাড়ছে। তাই থেকেই ছড়াচ্ছে করোনা সংক্রমণ বলে মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি।