নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে। সেই মামলায় সিবিআইয়ের চার্জশিট নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করলেন বিচারক। মূলত যাঁরা চাকরির জন্য টাকা নিয়েছেন, তাঁদের নাম রয়েছে চার্জশিটে, অথচ চাকরির জন্য যাঁরা টাকা দিয়েছেন, সেই সমস্ত চাকরি প্রাপ্তদের নাম চার্জশিটে নেই। আদালতের বক্তব্য, যাঁরা চাকরির জন্য টাকা দিয়েছেন, তাঁরাও আইন ভেঙেছে। তাই তাঁদেরও নাম চার্জশিটে থাকা উচিত। শুক্রবার নিয়োগ মামলায় তদন্তকারী সংস্থার সিবিআইকে সেই সমস্ত প্রার্থীদের নাম প্রকাশ্যে আনতে বলল আদালত।
এদিন নিয়োগ দুর্নীতি মামলা ওঠে আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে। সেখানে নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডল এবং নীলাদ্রি ঘোষকে হাজির করানো হয়। এই তিনজনের বিরুদ্ধে আগেই চার্জশিট দিয়েছিল সিবিআই। পরে সিবিআইয়ের কাছে চার্জশিটের ব্যাখ্যা চেয়েছিল আদালত। শুনানিতে সেই চার্জশিটের ব্যাখ্যা সিবিআইয়ের কাছ থেকে চেয়ে পাঠিয়েছিলেন আদালতের বিচারক। সেই প্রসঙ্গে উঠে আসে টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়া প্রার্থীদের বিষয়টি।
বিচারক প্রশ্ন করেন, ‘কুন্তল, নীলাদ্রি, তাপসরা তো এজেন্ট ছিলেন। এঁরা টাকা নিয়ে চাকরি দিয়েছেন। কিন্তু এঁদেরকে অনেকেই টাকা দিয়েছিলেন। যাঁর মধ্যে বেশ কয়েকজন চাকরি পেয়েছেন। যাঁরা চাকরি পাননি, তাঁদের কথায় না হয় ছেড়ে দেওয়া হল। কিন্তু যাঁরা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের নাম চার্জশিটে নেই কেন?’ এরপরেই তাঁদের নাম প্রকাশ্যে আনতে বলেন বিচারক। যদিও সিবিআই তরফ থেকে আইনজীবী জানান, এই সমস্ত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে এখনও শক্তপোক্ত প্রমাণ মেলেনি। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। অন্যদিকে, এদিন নীলাদ্রি, কুন্তল এবং তাপসের আইনজীবীরা তাঁদের জামিনের আবেদন জানাননি। আগামী ২৩ জুন পর্যন্ত তাঁদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৩ জুন। ওইদিন সিবিআইকে কেস ডায়েরি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এই মামলায় আদালত ওই দিন নির্দেশ দিতে পারে বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, তাঁর কাছে যাবতীয় ফাইল শিক্ষা সচিবের কাছ থেকে যেত এবং তিনি সেই সমস্ত ফাইলে সই করতেন। এরপর গত বৃহস্পতিবার রাজ্যের শিক্ষাসচিব মণীশ জৈনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআইয়ের আধিকারিকরা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন। তারই মধ্যে এই সংক্রান্ত মামলায় টাকা দিয়ে চাকরি প্রাপ্তদের নাম প্রকাশ্যে আনতে বলল আদালত।