গরুপাচারকাণ্ডে গ্রেফতার বিএসএফ কম্যান্ডান্ট সতীশ কুমারকে ১৪ দিনের CBI হেফাজতের নির্দেশ দিল আসানসোল জেলা ও দায়রা আদালত। বুধবার দুপুরে অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করে একাধিক গুরুতর অভিযোগ তোলেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। সঙ্গে প্রশ্ন তোলের, তাঁর পরিবারের সদস্যদের টাকার উৎস নিয়ে।
এদিন সিবিআইয়ের আইনজীবী কালীচরণ মিশ্র দাবি করেন, সতীশ কুমারের সব মিলিয়ে ১০০ কোটি টাকার হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তি রয়েছে। তাঁর শ্বশুরের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রয়েছে ১৬ কোটি টাকা। ছেলের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেও বিপুল টাকা লেনদেন করেছেন তিনি।
সঙ্গে সিবিআইয়ের দাবি, বার বার সমন পাঠানো হলেও সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দেননি সতীশ কুমার। উলটে কলকাতায় এসে সাক্ষীদের হুমকি দিয়েছেন। সেকথা সিবিআইয়ের সামনে সাক্ষ দিয়ে জানিয়েছেন সাক্ষীরা। তার প্রতিলিপিও এদিন আদালতে পেশ করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী।
সিবিআই সূত্রের খবর, ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সাল থেকে মুর্শিদাবাদে বিএসএফের ৩৬ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কম্যান্ডান্ট থাকাকালীন সংগঠিত গরুপাচারচক্র গড়ে তুলেছিলেন সতীশ কুমার। বড় সংখ্যায় গরু পাচারের আগে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় এনামুলসহ বিভিন্ন গরুপাচারকারীদের সঙ্গে বৈঠক করতেন BSF কর্তারা। তার পর নির্দিষ্ট জায়গায় দিয়ে পাচার করা হত নির্দিষ্ট সংখ্যায় গরু। কোথা দিয়ে কোন গরু পাচার হবে তা ঠিক করলে গরুর গায়ে দেওয়া হত বিভিন্ন রঙের দাগ। পাচারের প্রতিটি ক্ষেপের জন্য ৩৫ – ৪০ লক্ষ টাকায় পাচারকারীদের সঙ্গে রফা করতেন বিএসএফ কর্তারা।
এদিন দুপক্ষের বক্তব্য শুনে সতীশ কুমারকে ১৪ দিনের জন্য সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন আসানসোল আদালতের বিচারক।
সতীশ কুমারের গ্রেফতারি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা চরমে উঠেছে। বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে, রাজ্য পুলিশের সাহায্য ছাড়া গরুপাচার অসম্ভব। তাই এই ঘটনার তদন্তে নজরে রয়েছেন একাধিক পুলিশ শীর্ষকর্তা।
সিপিআইএমের তরফে বিমান বসু বলেন, ‘তৃণমূল ও বিজেপির বোঝাপড়ার জেরেই গরুপাচার নিয়ে এতদিন তদন্ত হয়নি।’ তৃণমূলের তরফে অভিযোগ খারিজ করে দাবি করা হয়েছে, ‘নির্বাচন এলেই তৎপরতা বাড়ে কেন্দ্রীয় সংস্থার।’