বাংলায় সিপিএমের ইতিহাসে এটাই প্রথমবার। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের বাড়ি ঘেরাও করলেন যৌনকর্মীরা। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে একটি টুইট করেন মহম্মদ সেলিম। তারপর সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ভাইরাল হয়ে যায়। সেখানে সেলিমের টুইটে ‘পতিতা’ শব্দের ব্যবহার নিয়ে বেশ বেকায়দায় পড়ে যায় দল এবং তার রাজ্য সম্পাদক। সিপিএম নেতার মন্তব্যে যৌনকর্মীদের সম্মানহানি হয়েছে বলে দাবি করেন অনেকে।
এদিকে রাজনৈতিকভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করতে গিয়ে পতিতাদের প্রসঙ্গ তুলে এনেছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। আর তা নিয়েই রাজ্য–রাজনীতি তোলপাড় হয়ে যায়। এই টুইট নিয়ে বিতর্ক তৈরি হতেই বুধবার আরও চাপে পড়ে যান সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত মোমিনপুর পেট্রোল পাম্পের সামনে মহম্মদ সেলিমের বাড়ি ঘেরাও করেন যৌনকর্মীরা। তবে রাজ্য সম্পাদক বাড়িতে রয়েছেন কি না সেটা বোঝা যায়নি। তিনি পার্টি অফিসেও থাকতে পারেন বলে খবর। যৌনকর্মীদের হাতে ছিল পোস্টার। মহম্মদ সেলিমের মন্তব্যের চরম নিন্দা করে সিপিএম নেতার ক্ষমা চাওয়ার দাবি তোলেন তাঁরা।
অন্যদিকে এই দাবি পূরণ না হলে তাঁরা আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের পার্টি অফিস ঘেরাও পর্যন্ত করতে পারেন। এমন আশঙ্কাও করা হচ্ছে। অভিষেক পতিতাদের মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচার করেন বলেও টুইট করেছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। তাই নিয়েই এত জলঘোলা হচ্ছে। এরপরই দলের ভিতরে–বাইরে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়। আজ বুধবার সকাল থেকে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের বাড়ির গেটের সামনে প্রতিবাদ অবস্থানে বসেছেন যৌনকর্মীরা। তাতে এলাকায় সম্মান নষ্ট হচ্ছে লালপার্টির কমরেডের।
আরও পড়ুন: ‘জাতীয় স্তরে ইন্ডিয়া, আর এখানে বিজেন্ডিয়া’, সিপিএম–কংগ্রেসকে তোপ মমতার
ঠিক কে, কি বলছেন? পরিস্থিতি বেগতিক দেখে এখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে তাঁর দলের শীর্ষ নেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘আমার এই বিষয়ে কিছু জানা নেই। তাই না জেনে কোনও মন্তব্য করা ঠিক না। যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, কেউ তাঁদের সেখানে পাঠিয়েছেন কি না, সেটাও আমার জানা নেই।’ পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘২০০৪ সালে মহম্মদ সেলিম যখন উত্তর–পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ হয়েছিলেন তখন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অজিত পাঁজার পুত্রবধূকে প্রকাশ্যে একই ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন। তাই এটা প্রমাণিত যে, এই সব তাঁর সংস্কৃতিতে রয়েছে।’