রাজ্যে উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে ডেঙ্গি। কলকাতায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই ডেঙ্গি ছিল উর্ধ্বমুখী। দু সপ্তাহ আগে কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিল ১২৭৬ জন এবং তার এক সপ্তাহ পরে তা বেড়ে হয়েছে ১৩৬৭ জন। এই অবস্থায় ডেঙ্গি কবে যাবে? সেই আশাতেই চেয়ে রয়েছেন সকার থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক। এমন অবস্থায় আশার কথা শোনালেন পতঙ্গবিদরা। তাদের মতে, গত কয়েক সপ্তাহে টানা বৃষ্টির ফলেই উর্ধ্বমুখী হয়েছে ডেঙ্গি। তবে পুজোর পর আর টানা বৃষ্টি না হলে সেক্ষেত্রে ডেঙ্গির গ্রাফ নিম্নমুখী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ জলেই বংশবিস্তার করে ডেঙ্গিবাহী মশার লার্ভা। সে ক্ষেত্রে বৃষ্টি না হলে বংশবিস্তারের সুযোগও থাকবে না। ফলে বৃষ্টি না হলে নভেম্বরের মাঝামাঝি ডেঙ্গি পুরোপুরি চলে যাবে।
আরও পড়ুন: ৪ সপ্তাহে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ হাজার পেরোল, কমবে কবে? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা
প্রসঙ্গত, এবছর রাজ্যে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গি। চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ৫০ হাজার জন। এছাড়া মৃত্যু হয়েছে ৬২ জনের। যার মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তবে গত কয়েক সপ্তাহে কলকাতাতেও মারাত্মকভাবে বেড়েছে ডেঙ্গি। কলকাতার ১০ এবং ১২ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষ সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। যদিও সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, এখন স্থিতাবস্থায় আছে ডেঙ্গি। তবে বেসরকারি সূত্রের খবর, এখনও প্রতিদিনই হাসপাতালে ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছেন। তবে সেই সংখ্যাটা অনেকটাই কমেছে। কামারহাটি সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। আবার বেসরকারি হাসপাতালে বহু রোগী ভর্তি রয়েছেন। সে ক্ষেত্রেও ডেঙ্গি রোগী ভর্তি হওয়ার সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কমেছে বলে পিয়ারলেস হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে। বর্তমানে এই হাসপাতালে ৩০ জন ডেঙ্গি রোগী ভর্তি আছেন।
হাওড়া নারায়না হাসপাতালে আবার ১০ জন ডেঙ্গি রোগী ভর্তি আছেন। বেলঘড়িয়া জেনিথ হাসপাতালে ২০ জন ডেঙ্গি রোগী বর্তমানে চিকিৎসাধীন। এছাড়াও বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে বর্তমানে ৬০জন ডেঙ্গি রোগী চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। আবার অনেক বেসরকারি হাসপাতালে কোভিডের মতো ডেঙ্গি রোগীদের বাড়িতে হোমকেয়ার পরিষেবা দিচ্ছে।
পতঙ্গবিদদের বক্তব্য, পুজোর মধ্যে যদি আর বৃষ্টি না হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে ডেঙ্গি বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। ডেঙ্গি ককার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে ডেঙ্গি পরিস্থিতি স্থিতিশীল আছে। তবে পরবর্তী পরিস্থিতি নির্ভর করছে বৃষ্টির উপরে। বৃষ্টি না হলে নভেম্বরের মাঝামাঝি ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।