পশ্চিমবঙ্গ থেকে ভিন রাজ্য, আবার প্রতিবেশী দেশেও পাচার করা হচ্ছে হাতি। কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলায় এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। যা নিয়ে বিস্মিত কলকাতা হাইকোর্ট। এই সংক্রান্ত মামলায় অভিযোগ উঠেছে এ রাজ্যের প্রায় ২৬ থেকে ২৮ টি হাতি ভিন রাজ্যে বা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সার্কাস সংস্থা হাতি ভিন রাজ্যে বিক্রি করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এই সংক্রান্ত মামলায় হলফনামা চেয়েছে বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি রবি কৃষান কাপুরের ডিভিশন বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গে বন্যপ্রাণী মৃত্যু রুখতে রেলপথে আসছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি
মামলার অনুযায়ী, কেপ ফাউন্ডেশন নামে একটি পশুপ্রেমী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে। সেই মামলাতে অভিযোগ তোলা হয়, এ রাজ্য থেকে ভিন রাজ্যে বা ভিন দেশে হাতি পাচার করা হচ্ছে। মামলাকারী সংস্থার বক্তব্য, আগে সার্কাসে বন্যপ্রাণী ব্যবহার করা হত। এখন তা বন্ধ রয়েছে। ফলে বিভিন্ন সার্কাস সংস্থা তাদের হাতি বিক্রি করছে। পশুপ্রেমী সংস্থার তরফে এ বিষয়ে অনুসন্ধান চালানো হয়। তারা জানতে পারে ঘুরপথে হাতি পাচার করা হচ্ছে। আবার হাতিগুলিকে দিয়ে বেআইনিভাবে খাটানো হচ্ছে। এ বিষয়টি ধরে ফেললে আবার তারা জানাচ্ছে, যে তারা হাতি প্রতিপালন করছে। কিন্তু, আদতে হাতি ব্যবহার করে আয় করা হচ্ছে বলেই বক্তব্য ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার।
সংস্থার আইনজীবীর বক্তব্য, ভারতের বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইন ১৯৭২ অনুযায়ী বন্যপ্রাণীকে কোনওভাবে আর্থিক বিবেচনা বা লাভজনক কাজের জন্য ব্যবহার করা যাবে না। পাশাপাশি বন্দি হাতি এক ব্যক্তির কাছ থেকে অন্য ব্যক্তির কাছে যেমন স্থানান্তর করা যায় না তেমনি বিক্রিও করা যায় না। এই আইন অনুযায়ী সকল বন্যপ্রাণী সরকারের সম্পদ। এক রাজ্যের হাতি অন্য রাজ্যের বিক্রি করা যায় না। কিন্তু সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে এই সংস্থার তরফে। তার একটি উদাহরণ তারা দিয়েছে। সংস্থার তরফে মামলায় জানানো হয়, এ রাজ্যের নামি একটি সার্কাস কোম্পানি তাদের তিনটি হাতি বিক্রি করেছে। সেগুলি বিহারের একটি আশ্রমে পাওয়া গিয়েছে। যদিও আশ্রম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তারা হাতিগুলি উপহার হিসেবে পেয়েছে এবং তাদের কাছে এই হাতিগুলি যত্নের সঙ্গেই রয়েছে। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা চলছে। ওই হাতিগুলি বাংলায় ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আদালতে হস্তক্ষেপ চেয়েছে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তাদের বক্তব্য, এইভাবে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে হাতি বিক্রি করা যায় না। তেমনি কাউকে উপহার দেওয়া যায় না। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনি।