অয়ন শীলের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা থেকে শুরু করে সিনেমা প্রযোজনা—নানা জায়গায় দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করা হয়েছে বলে তথ্য পেয়েছে ইডি। এবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) আতসকাচের নীচে চলে এল অয়ন শীলের লকার। শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে ধৃত অয়ন শীলের একাধিক লকার রয়েছে বলে নথি হাতে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। অয়ন শীল এবং তাঁর স্ত্রী কাকলি শীলের নামে ওই সব লকার রয়েছে বলে খবর। লকার সম্পর্কে তথ্য জানতে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন ইডি অফিসাররা।
ঠিক কী তথ্য পেয়েছে ইডি? ইডি সূত্রে খবর, এই লকারের মধ্যে ভাগ আছে। কয়েকটি রয়েছে অয়ন শীলের নামে। আর কয়েকটি আছে তাঁর স্ত্রী কাকলি শীলের নামে। তাই এই সূত্র ধরে এবার কাকলিকে তলব করা হতে পারে। ইতিমধ্যেই তদন্তকারীরা দু’বার কাকলির সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করেছিলেন। অয়নের সংস্থা এবিএস ইনফোজোনের ডিরেক্টর পদে রয়েছেন কাকলি শীল। তাই লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য তাঁর কাছ থেকে পেতে পারেন অফিসাররা। নিয়োগ দুর্নীতির টাকা সোনা আকারে লকারে রাখা আছে কিনা তদন্ত শুরু করেছেন অফিসাররা। সেক্ষেত্রে আবার কাকলিকে তলব করা হতে পারে।
ব্যাঙ্ক লকারে কী এমন আছে? এখানে নিয়োগ দুর্নীতি টাকায় সোনা–রত্ন কিনে রেখে দিয়েছেন অয়ন শীল বলে মনে করছেন ইডি অফিসাররা। এখন সেখান থেকে কোনও সামগ্রী সরিয়ে ফেলা হতে পারে বলে তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। তাই লকার সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য চেয়ে ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। অয়ন বিপুল জমি কিনেছিলেন। লকডাউনের মধ্যেও হুগলির গুড়াপে ছেলে অভিষেক শীলের নামে কোটি টাকার জমি কিনেছিলেন অয়ন। যার রেজিস্ট্রি বাবদ খরচই হয়েছিল ১০ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা। ভাঙড়ে আরও তিনটি জমি কিনেছিলেন অয়ন। কাকলির নামেও বিপুল সম্পত্তি মিলেছে। আর এগুলি সবটাই হয়েছে নিয়োগ দুর্নীতির টাকায় হয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
আর কী জানা যাচ্ছে? ইডি’র তথ্য অনুযায়ী, হালিশহর, পানিহাটি, কামারহাটি পুরসভায় নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে অয়ন শীলের হাত ধরেই। চাকরি দিয়ে অয়ন শীল ৫০ কোটি টাকার উপর সংগ্রহ করেছেন। মজদুর এবং টাইপিস্ট পদেও দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি করেছে ইডি। তাই দফায় দফায় জেরা চলছে তাঁর। রাজ্যের ৬০ পুরসভায় পাঁচ হাজার ভুয়ো নিয়োগ হয়েছে এই অয়ন শীলের দৌলতে। সেখানে বিপুল টাকার লেনদেন হয়েছে বলেও দাবি ইডি অফিসারদের। তবে এখন তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখতে চাইছেন, কী আছে অয়ন ও কাকলির লকারে?