'ভিআইপি' চোর। গাড়ি করে আসত চুরি করতে। সঙ্গে দেহরক্ষী, বাউন্সার। বিভিন্ন আবাসনে চুরি দেদার টাকাও করেছিল। আভিজাত আবাসনে ছিল একাধিক ফ্ল্যাট। তার ছেলেমেয়েরাও নামী স্কুলে পড়াশুনো করে। শেষ পর্যন্ত সেই 'ভিআইপি' চোর ধরা পড়ল কলকাতা পুলিশের হাতে।
তার বিরুদ্ধে প্রায় বারোশোও চুরির মামলা রয়েছে। ধরাও পড়েছে কয়েকবার। কিন্তু ছাড়া পেয়ে ফের চুরির 'পেশায়' নেমে পড়ছে। কলকাতা পুলিশের কাছে খবর ছিল। শনাক্তও করা গিয়েছিল তাঁকে। শেষ পর্যন্ত তাকে ধরতে প্রায় এক বছর লেগে গেল।
সেই চোরের নাম নাদিম কুরেশি ওরফে কপিল ত্যাগী। তার বাড়ি উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে। সল্টলেকে একটি চুরির ঘটনায় তাকে শনাক্ত করা গিয়েছিল। ২০২১ সালে তাকে শনাক্ত করে বিধাননগর থানার পুলিশ। কিন্তু নাদিমের নাগাল পেতে এক বছরের বেশি সময় লেগে গেল। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সাহায্যে গত বৃহস্পতিবার তাকে গ্রেফতার করা গিয়েছে।
(পড়তে পারেন। মেয়েকে কান মলা দেওয়ায় শিক্ষককে কচা ভেঙে পেটালেন ছাত্রীর বাবা)
কী ভাবে চুরি করত নাদিম?
পুলিশ জানিয়েছে, ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সল্টলেকের সিএল ব্লকে একটি আবাসনের দুটি ফ্ল্যাট থেকে ১২ লক্ষ টাকা চুরি যায়। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে সাদা গাড়িতে চেপে এসে এক ব্যক্তি আবাসনে ঢোকে। তাঁর সম্পর্কে খোঁজ করতে গিয়েই পুলিশ নাদিমকে চিহ্নিত করে। পুলিশে জানতে পরেছে, দামি গাড়ি চেপেই সে বিভিন্ন রাজ্য যেত চুরি করতে। তার সঙ্গে থাকত ব্যক্তিগত দেহরক্ষী, বাউন্সার। অভিজাত এলাকার বিত্তশালীদের ফ্ল্যাটেই নজর রাখত নাদিম। গাড়ি নিয়ে সটান ঢুকে পড়ত সেই ফ্ল্যাটে। হাতে ধরা অ্যাটাচিতে থাকত তালা ভাঙার যন্ত্র। নাদিমের আবভাব দেখে আবাসনের নিরাপত্তা রক্ষীরা তাঁকে সন্দেহ করতেন না। ফলে সে সহজে আবাসনে ঢুকে পড়তে পারত।
আবাসনে ঢুকে প্রথমেই লিফটে করে সোজা উঠে যেতে আবাসনের সবচেয়ে উঁচু তলায়। তার পর সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় খেয়াল করত কোন ফ্ল্যাট খালি রয়েছে। তারপর তালা ভেঙে ফ্ল্যাটে ঢুকে চুরি করত। এই ভাবেই সে সল্টলেকের আবাসনে চুরি করে।
কেন ধরতে একবছর দেরি?
বিধাননগর পুলিশ জানিয়েছে, নাদিমের সম্পর্কে খোঁজ করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে রাজস্থানে একটি মামলায় জেল খাটছে সে। কিন্তু গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে গেলেও চুরি, ডাকাতি-সহ একাধিক মামলায় সে তিহার থেকে গাজিয়াবাদ জেলে ঘুরছে। পুলিশের দাবি, আইনি জটিলতার কারণে তাকে হাতে পেতে এক বছর সময় লাগল।