দুর্গাপুজোর মরশুমে ইলিশ ধরে তা বাজারে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৎস্যজীবীরা। কিন্তু সে পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হল না। এবার ইলিশ মাছ ধরার ক্ষেত্রে শূন্য জাল নিয়েই ফিরতে হচ্ছে মৎস্যজীবীদের। শুরুতে মৎস্যজীবীদের জালে ইলিশের ঝাঁক ধরা পড়ছিল। বাঙালির পাতেও তা উঠে আসছিল। কিন্তু মরশুম যত এগিয়েছে, ততই কমতে শুরু করেছে ইলিশের সংখ্যা। আর এখন তো একেবারেই জালে ইলিশ মাছ উঠছে না। আর তাই দুর্গাপুজোর মুখে হাসি নেই মৎস্যজীবীদের। ইলিশ মাছ যে জালে উঠছে না তা টের পেয়েছেন বাঙালিরা। বাজারে গিয়ে খোঁজ করলেও দেখা নেই রূপোলি ফসলের।
এদিকে হিমঘর এবং বাংলাদেশ থেকে আশা ইলিশ মাছ বাজারে মিলছে। যার দাম আকাশছোঁয়া। সবার পক্ষে সেটা কেনা সম্ভব হচ্ছে না। আর যাঁরা কিনছেন তাঁদের রীতিমতো হাতে ছ্যাঁকা লাগছে। ইলিশ মাছ দিয়ে ভাত খেতে চাওয়ার রীতি অনেক পরিবারেই আছে। দুর্গাপুজোর সময় ইলিশ মাছ দিয়ে এলাহি আয়োজন করে আনন্দ উপভোগ করতে চান বাঙালিরা। তাই সকাল হতেই বাজারের ব্যাগ নিয়ে খোঁজ করতে শুরু করেছেন গৃহকর্তারা। কিন্তু তা মিলছে না। গঙ্গার ইলিশ মাছ একটু সস্তা পড়ে। সেখানে হিমঘরের ইলিশ মাছের স্বাদ তেমন মেলে না। আবার পদ্মার ইলিশের অনেক দাম।
অন্যদিকে ইলিশ ধরার কাজে বেরিয়ে সাফল্য আসছে না মৎস্যজীবীদের। গত দেড় মাস ধরেই সেভাবে জালে উঠছে না ইলিশ মাছ। তার মধ্যে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার জেরে সমুদ্রে নামতে পারেনি ট্রলারগুলি। যখন নামতে পেরেছেন, তখন খুব সামান্য ইলিশ মাছ নিয়ে ফিরতে হয়েছে মৎস্যজীবীদের। যা বাজারে দিয়ে বাড়তি রোজগার করার পক্ষে যথেষ্ট নয়। আর পরিসংখ্যান বলছে, এবার মাত্র ১১ হাজার মেট্রিক টন রুপোলি শস্য ধরা পড়েছে। এই পরিমাণ ইলিশ মাছ অনেকটা কম বলে দাবি করছেন মৎস্যজীবীরা। ইলিশ মাছের সংকট মৎস্যজীবীদের মুখের হাসি কেড়ে নিয়েছে। তবে এবার প্রথমে পরিস্থিতি ভাল ছিল।
আরও পড়ুন: ‘যে কটা আবর্জনা পড়ে রয়েছে তাঁদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করুন’, হুঙ্কার দিলেন অভিষেক
আর কী জানা যাচ্ছে? আজ, মহাষষ্ঠী। সেখানে মানিকতলা বাজার থেকে শুরু করে লেক মার্কেট বাজার, গড়িয়াহাট বাজারে ইলিশ মাছের আকাল দেখা দিয়েছে। যেটুকু আছে তার ভীষণ দাম। ইলিশ বিক্রি করে মৎস্যজীবীরা বাড়তি লাভ করতে চান। সেই টাকা দিয়ে দুর্গাপুজোর আনন্দে মেতে ওঠেন। সেখানে এবার দুর্গাপুজোর সময় মুখ ভার মৎস্যজীবী পরিবারগুলির। বাজারে ইলিশ প্রায় অমিল। এই বিষয়ে কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, ‘ইলিশ মাছের জোগান মোটেই ভাল হয়নি। লোকসান হয়েছে বেশি। এই ঘাটতি পূরণ অসম্ভব। তাই এবার দুর্গাপুজোয় হাসি নেই মৎস্যজীবীদের মুখে।’