বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। সেখানে বাংলা থেকে আগের মতো আসন পাওয়ার আশা দেখা যাচ্ছে না। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ১৮টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। এবার সেটা অর্ধের (৯টা) হয়ে যেতে পারে বলে গেরুয়া শিবিরের সমীক্ষায উঠে এসেছে। কারণ বিজেপির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রেখেছে। তার জেরে বাংলার মানুষ বঞ্চিত। এই অভিযোগ তুলে বাংলার বকেয়া টাকা আদায়ের দাবিতে আন্দোলন করছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর লোকসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে এটাই হবে ঘাসফুলের ব্রহ্মাস্ত্র। মানুষের সামনে সেটাই তুলে ধরা হবে। এবার সেটারই নতুন ব্যাখ্যা দিতে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এদিকে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বঙ্গ–বিজেপি নেতারা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় রাজ্যে যাঁরা বঞ্চিত তাঁদের খুঁজে বের করে কলকাতায় নিয়ে এসে সমাবেশ করার ডাক দেয় বিজেপি। আর ধর্মতলার ওই সভায় এবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। আর তিনি তাতে সম্মতি দিয়েছেন বলে বিজেপি সূত্রে খবর। তার পরের মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে আসছেন কলকাতায়। তবে হিন্দু ধর্মের প্রচারে। যে গীতা পাঠের আয়োজন করা হচ্ছে সেখানে আসবেন তিনি। ব্রিগেডের লক্ষ কণ্ঠ গীতাপাঠে অংশ নিয়ে বার্তা দেবেন প্রধানমন্ত্রী। তারপর নতুন বছরে রয়েছে অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন।
কবে আসছেন অমিত শাহ? অন্যদিকে আগামী ২৯ নভেম্বর বিজেপির সভায় অমিত শাহ আসছেন বলে খবর। সেটার সবুজ সংকেতও পেয়েছে বঙ্গ–বিজেপি। আসলে বাংলার বকেয়া আদায়ে তৃণমূল কংগ্রেস যেভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে তাতে বেশ চাপে পড়েছে বিজেপি। নয়াদিল্লি থেকে শুরু করে রাজভবন— গরিব মানুষের দাবিতে তোলপাড় করে তুলেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। গ্রামের মানুষ তা প্রত্যক্ষ করেছেন। সুতরাং গ্রামবাংলায় বিজেপির ভোটব্যাঙ্কে যে ধস নামবে তা বুঝতে পেরেছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। সেটারই ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে অমিত শাহকে নিয়ে এসে নতুন ব্যাখ্যা তুলে ধরা হবে।
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিহতদের পরিবারের জন্য সুখবর, বড় সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে
ঠিক কী বলছে তৃণমূল কংগ্রেস? এই খবর পেয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করতে অবশ্য ছাড়েনি তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কথায়, ‘একুশ সালের নির্বাচনের আগে মোদী–শাহ অনেকবার যাতায়াত করেছেন। রকবাজদের মতো আচরণ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ওঁদের আর এসে লাভ নেই। বাংলার প্রতি বৈষম্য প্রকট হবে আরও।’ ২৯ নভেম্বর ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভা করতে চাইছে বিজেপি। ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে এখানেই সভা করেছিল রাজ্য বিজেপি। তখনও অমিত শাহ উপস্থিত ছিলেন। বিজেপির এই সভার অনুমতি এখনও পুলিশের কাছ থেকে মেলেনি। আর অনুমতি না পেলে কলকাতা হাইকোর্টে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিজেপি নেতৃত্ব।