যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র সুদীপ রাহা। ওই মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ইতিমধ্যেই বলেছেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এখন রাজ্যপালের নিয়ন্ত্রণে। তাই এই ঘটনা তাঁরই ব্যর্থতা। হস্টেল কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে এই মামলায়। আর রাজ্য–রাজ্যপাল সংঘাতের মধ্যেই ছাত্র মৃত্যুর মামলায় পার্টি করা হল আচার্যকে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ–সভাপতি সুদীপ রাহার মামলায় যুক্ত করা হল বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যকে।
এদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসিটিভি বসানো–সহ নানা দাবি তিনি আগেই তুলে ছিলেন। নানা দাবি নিয়েই কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র সুদীপ রাহা। এমনকী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। সুদীপ রাহার বক্তব্য, আচার্য হিসাবে রাজ্যপালই বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পদাধিকারী। আর ঘটনার সময় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যহীন ছিল। তাই মামলায় তাঁকেও যুক্ত করা হোক। র্যাগিং করেই ওই প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। হস্টেলের একাধিক আবাসিককে গ্রেফতারও করা হয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে আগে একটি জনস্বার্থ মামলা করেন আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সুদীপ রাহার দায়ের করা মামলাটি দ্বিতীয় জনস্বার্থ মামলা।
অন্যদিকে সুদীপ রাহার মামলায় হস্টেল কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস তথা আচার্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এই জনস্বার্থ মামলায় ইউজিসি’র নিয়ম মেনে বিশ্ববিদ্যালয় এবং হস্টেলে বসাতে হবে সিসিটিভি বলে আবেদনে উল্লেখ করেছেন তিনি। মামলার দৃষ্টি আকর্ষণের সময়ও আচার্যের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী সোমবার মামলার শুনানি হতে পারে। এই মামলায় যুক্ত করা হল রাজ্যপালকে। এই মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। চলতি সপ্তাহে শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। গত ৯ অগস্ট মৃত্যু হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার।
আরও পড়ুন: বিধানসভায় হঠাৎ ঢুকে পড়ল সিবিআই, বাদল অধিবেশনের আগে তুলকালাম কাণ্ড
আর কী জানা যাচ্ছে? এই ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার পর থেকে রাজ্যপাল অত্যন্ত সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। তিনি নিজে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বারবার গিয়েছেন। পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এমনকী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে রাজভবনে ডেকে নিয়ে গিয়ে বৈঠকও করেছেন। তবে সিভি আনন্দ বোস স্বীকার করেছেন, উপাচার্য না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত তার ব্যবস্থা করা হবে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষী সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘এক একবার ছাত্রদের এক একটি গ্রুপ এসে বলে যাচ্ছিল, গেট যেন বন্ধ থাকে। গেট ছেড়ে আমাদের যেতে বারণ করা হয়েছিল।’