নতুন ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়েছে। চটকল শ্রমিকদের চাকরি ও বেতনের নতুন শর্তে এই চুক্তি হয়েছে রাজ্য সরকারের সঙ্গে মালিক–শ্রমিক সংগঠনের। এই চুক্তির জেরে খুলেছে শ্রমিকদের পদোন্নতির পথও। আর চুক্তি অনুযায়ী, সেই সুবাদে বাড়তে পারে রোজগারও। আবার প্রভিডেন্ট ফান্ড–সহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানেও একাধিক পদক্ষেপ করল সরকার বলে জানান রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। রাজ্যে ৪০ লক্ষ জুট মিল শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে নতুন চুক্তি হয়েছে।
এদিকে আগে চটকলগুলিতে শ্রমিকদের কোনও শ্রেণিবিন্যাস ছিল না। নতুন চুক্তিতে তাঁদের হাই স্কিলড, স্কিলড, সেমি স্কিলড এবং অদক্ষ আনস্কিলড এই চার শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। সুতরাং দক্ষতা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের উন্নতির দরজা খুলে গেল নতুন চুক্তিতে। এই বিষয়ে রাজ্যের অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার তীর্থঙ্কর সেনগুপ্ত বলেন, ‘চটকল শ্রমিকদের শ্রেণিবিন্যাসের জন্য রাজ্য সরকার স্টেট প্রোডাক্টিভিটি কাউন্সিলকে দিয়ে সমীক্ষা করানো হয়। তাঁরাই এই চারটি ভাগের সুপারিশ করে। সেই সুপারিশই নতুন চুক্তির মাধ্যমে কার্যকর হয়েছে।’ জুট মিল শ্রমিকদের ২৩টি ইউনিয়ন রাজ্য সরকারের ন্যূনতম মজুরির সঙ্গে সহমত হয়েছেন।
অন্যদিকে চটকল মালিকরাও নতুন ব্যবস্থাকে স্বাগত জানান। তাঁদের সংগঠন আইজেএমের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সঞ্জয় কাজারিয়া বলেন, ‘চটকলগুলির আধুনিক করা হচ্ছে। দক্ষ কর্মী লাগবে। অদক্ষ কর্মীরাও প্রশিক্ষণ নিয়ে নতুন কাজের সুযোগ পাবেন।’ এখন কাজে যোগ দিলেই জুট মিল বা চটকল শ্রমিকরা ন্যূনতম ৫৪১ টাকা মজুরি পাবেন। কাজ শেষে হাতে টাকা দেওয়া হবে। এছাড়াও যারা দক্ষ শ্রমিক তাঁরা ৭১৫ টাকা মজুরি পাবেন। ২০ বছরের বেশি সময়ে কাজ করা জুটমিল শ্রমিকদের স্থায়ীকরণ করা হল। এখন থেকে পিএফের বিষয়টা সরকারের অধীনে থাকবে। গ্র্যাচুয়িটিও সরাসরি সরকারি করে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ছাত্র–যুব উৎসব স্থগিত করার ফরমান জারি, বরাদ্দ করা অর্থও ফেরাতে নির্দেশ রাজ্যের
আর চটকল কর্মীদের পিএফ পরিচালনা করবে আঞ্চলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড কমিশনারের দফতর। এই বিষয়ে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, ‘অছি পরিষদের পরিচালনাধীন পিএফ ব্যবস্থায় চটকলে তহবিল নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে। তাই কোনও চটকলেই পিএফ পরিচালনার জন্য অছি পরিষদ গঠনের অনুমতি দেবে না রাজ্য। আর তৃণমূল কংগ্রেসের ট্রেড ইউনিয়নের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘গ্র্যাচুইটির ক্ষেত্রেও চটকলে নতুন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। এখন থেকে ওই টাকা মালিকদের নিয়মিত জমা দিতে হবে জীবন বিমা নিগমের দফতরে। অবসরের পরে শ্রমিকদের পিএফ এবং গ্র্যাচুইটির টাকা পেতে সুবিধা হবে।’