সোমবার উত্তরকন্যা অভিযান চলাকালীন বিজেপি কর্মী উলেন রায়ের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে পুলিশ মিথ্যা কথা বলছে বলে দাবি করেছেন বিজেপি–র সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এই দাবির সমর্থনে তিনি একটি ভিডিও টুইট করেছেন। সেই ভিডিও–তে দেখা যাচ্ছে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে একজন পুলিশ বন্দুকে গুলি ভরে চালাচ্ছেন। পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন আরও অনেক পুলিশ। সেই একই ভিডিও টুইট করে বিজেপি–র আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য প্রশ্ন তুলেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ কি শটগান ব্যবহার করে না? তা হলে এটা কী?’
যদিও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ পরিষ্কার জানিয়েছে যে তারা শটগান ব্যবহার করে না। আর প্রাথমিক ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানানো হয়েছে যে উলেন রায়ের মৃত্যু হয়েছে শটগানের গুলির আঘাতে। রাজ্য পুলিশ যে শটগান ব্যবহার করে না সেই দাবি করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। যদিও মঙ্গলবার এক ভিডিও বার্তায় কৈলাস বিজয়বর্গীয়র দাবি, ‘প্যালেট গান ব্যবহারের কথা অস্বীকার করে মিথ্যা কথা বলছে রাজ্য পুলিশ। উল্টে বিজেপি–র কর্মী–সমর্থকদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা চলছে।’ তাই এই ভিডিওকে হাতিয়ার করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়।
কৈলাস বিজয়বর্গীয় আরও বলেন, ‘পুলিশ টুইট করে দাবি করেছে যে তারা লাঠিচার্জ বা প্যালেট গান চালায়নি। কিন্তু আমার কাছে এক নয়, দশটি ভিডিও রয়েছে পুলিশকে বন্দুক চালাতে দেখা যাচ্ছে।’ এর পরই তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ শুনে নিন, আপনাদের আমি সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে যাব। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশ মিখ্যাবাদী।’
সেই একই ভিডিও টুইট করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও পুলিশ–প্রশাসনের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন বিজেপি–র আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। তিনি এদিন টুইটে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘ঠান্ডা মাথায় উলেন রায়কে খুন করেছে পুলিশ। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ কি শটগান ব্যবহার করে না? তা হলে এটা কী?’ এর পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে পুলিশের প্রতি অমিত মালব্য কটাক্ষ করে লিখেছেন, ‘নিজেকে বাঁচাতে হলে পিসির কাছে গিয়ে আশ্রয় নিন।’
এ ব্যাপারে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘এর আগে দেশে বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ প্যালেট গান ব্যবহার করেছে। তবে পশ্চিমবঙ্গে কোথাও এখনও পুলিশ প্যালেট গান ব্যবহার করেছে বলে আমার জানা নেই। আমাকে ভিডিওটা ভাল করে দেখতে হবে। সেটা সুপারইম্পোজ করা হয়েছে কিনা তা আমি জানি না। যতক্ষণ অন্য কিছু প্রমাণ না হচ্ছে আমি পুলিশের কথাতেই বিশ্বাস করব।’
এদিকে, জলপাইগুড়ি আদালতের নির্দেশে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করা হবে উলেন রায়ের দেহ। বুধবারই সেই ময়নাতদন্ত করা হবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আদালতের নির্দেশে, তিনজন চিকিৎসকের উপস্থিতিতে হবে ময়নাতদন্ত এবং তার ভিডিওগ্রাফিও করা হবে।