ব্রিটিশ আমলে এই দেশের রাজধানী ছিল কলকাতা। তাই সেটাকে সাজিয়ে তুলতে নানা পরিকল্পনা এবং সেই অনুযায়ী কাজ করেছিল ব্রিটিশ সরকার। পরাধীনতার সময় যে কাজ তারা করেছিল আজও সেই নিদর্শন কলকাতায় মেলে। তৎকালীন সময়ে নিকাশির কাজ করতে গিয়ে বেশ কিছু ইঁট ব্যবহার করা হয়েছিল। আজও উত্তর, মধ্য ও পূর্ব কলকাতায় রাস্তার নিচে রয়েছে ব্রিটিশ আমলে তৈরি ইটের নিকাশি পথ। সেই ইঁটের তৈরি নিকাশি পথ নিয়ে এখন চিন্তাভাবনা শুরু করেছে কলকাতা পুরসভা। কলকাতা পুরসভার নিকাশি বিভাগের পরিভাষায় একে বলা হয়ে থাকে ‘ব্রিক স্যোয়ারেজ।’ যা নিয়ে কাজ করতে চায় কলকাতা পুরসভা।
এদিকে এবার এই নিকাশি পথকে বাঁচাতে ১৭৫ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। এই নিয়ে বৈঠকও হয়। মেয়র পারিষদের বৈঠকে এই প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এই কাজ বাস্তবে করা সম্ভব হলে লেনিন সরণি, এপিসি রায় রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, ক্যামাক স্ট্রিট, এজেসি বোস রোড, পার্ক স্ট্রিট, লাউডন স্ট্রিট, রডন স্ট্রিট, রফি আহমেদ কিদওয়াই রোড, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট, ইলিয়ট রোড, রিপন স্ট্রিট, মৌলালি থেকে পামার বাজার পর্যন্ত এলাকা, রাজা দীনেন্দ্র রোড, রাইফেল রেঞ্জ রোড, বালিগঞ্জ পার্ক রোডে বৃষ্টিতে জল জমার পরিমাণ কমে যাবে। কলকাতায় বৃষ্টির পরিমাণ দেখেই ব্রিটিশরা এই নিকাশি ব্যবস্থা করেছিল।
আরও পড়ুন: ‘নেতা অযোগ্য গ্রুপবাজ স্বার্থপর’, লোকসভা নির্বাচনের মুখে কুণালের বিস্ফোরক পোস্ট
অন্যদিকে ব্রিটিশ জমানা শেষ হলেও ভারী বৃষ্টিতে কলকাতায় জল জমত। এখন অবশ্য বহু জায়গায় উন্নত প্রযুক্তি গড়ে ওঠায় জল জমে না আগের মতো শহরে। এই প্রকল্পে কলকাতা পুরসভা মাটির নিচে ব্রিটিশ আমলের নিকাশি পথকে গ্লাস রেইন ফোর্সড পলিমার পাইপের বর্ম পরিয়ে দেবে। আর ওই নিকাশি পথে জমে থাকা পলি বের করে আনা হবে। তবে বহু বছর ধরে ব্রিটিশ আমলের ইটের নিকাশি পথ ব্যবহার হয়ে আসছে। তাই মাঝে মধ্যেই ভঙ্গুর হয়ে ভেঙে যায়। এতে সমস্যা বাড়ে। নিকাশি ব্যবস্থা সঠিকভাবে রাখতে এবার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এছাড়া ব্রিটিশ আমলের এই ইঁটের নিকাশি পথ না বাঁচালে কলকাতা শহরকে বড় সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে। আর কলকাতা পুরসভা যে বিশেষ ধরনের পাইপ কাজে লাগাতে চাইছে তাতে ব্রিটিশ আমলের নিকাশি পথকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করবে। তাতে ওই পথও বাঁচবে। আবার নিকাশি ব্যবস্থাও সচল থাকবে। এই বিষয়ে কলকাতা পুরসভার নিকাশি বিভাগের মেয়র পারিষদ তারক সিং বলেন, ‘এই কাজ সফল হলে উত্তর, মধ্য ও পূর্ব কলকাতার নিকাশি ব্যবস্থায় একটা বড় পরিবর্তন ঘটবে।’ এখন বর্ষা আসতে দেরি আছে। তার আগে কাজটি সেরে ফেললে বর্ষায় ভোগান্তি তৈরি হবে না।