চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে প্রায় ১৩ হাজার মানুষ ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। কলকাতাতে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় হাজারের কাছাকাছি। এই অবস্থায় ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে তৎপর হয়েছে প্রশাসন। বিভিন্ন পুরসভায় ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সতর্ক করা এবং রোগীদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করার ব্যবস্থা থাকলেও এখনও পর্যন্ত কলকাতা পুরসভায় সেই ব্যবস্থা চালু হয়নি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভা অন্যান্য পুরসভাকে পথ দেখায়। তাহলে এখনও পর্যন্ত এই পুরসভায় কেন এই ব্যবস্থা চালু হয়নি তাই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। পুরসভার আধিকারিকদের মতে, পুর ক্লিনিক কাছাকাছি থাকার ফলে বাড়ি বাড়ি যাওয়ার প্রয়োজন হয় না।
আরও পড়ুন: সিজিও কমপ্লেক্সের ভিতরে মিলল ডেঙ্গির লার্ভা, চিঠি পেল বিধাননগর পুরসভা
কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সব ওয়ার্ডেই বাসিন্দাদের সুবিধার জন্য পুর ক্লিনিক আছে। বাসিন্দাদের একেবারে কাছেই এই সমস্ত পুর ক্লিনিক অবস্থিত। সেখানে বিনামূল্য ডেঙ্গি ম্যালেরিয়া টেস্টের ব্যবস্থা রয়েছে। তাছাড়া কেউ ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা খোঁজ নিয়ে থাকেন। এর পাশাপাশি টেলি কলিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। তার মাধ্যমে নাগরিকদের খোঁজ খবর রাখা যায়। সেই সঙ্গে কোনও প্রবীণ ব্যক্তি রক্ত পরীক্ষার জন্য আবেদন জানালে পুরসভার তরফে বাড়িতে গিয়ে রক্ত সংগ্রহের ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে সমস্যা হয় না বলেই জানিয়েছেন পুরসভার আধিকারিকরা।
বরাহনগর, হাওড়া, বৈদ্যবাটী, দক্ষিণ দমদম বিধান নগর প্রভৃতি পুরসভায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে জ্বরে আক্রান্তদের নমুনা সংগ্রহ করার পাশাপাশি মানুষকে সতর্ক করা হয়। উল্লেখ্য, গত বছরে ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি থাকলে এ বছরও একাধিক পুরসভা এলাকায় বহু মানুষ ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। তারপরেই একাধিক নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। জেলা প্রশাসনগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করতে হবে। বিশেষ করে প্রবীণ নাগরিকদের রক্ত সংগ্রহের ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রসঙ্গত, বর্ষা শুরু হতেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গি। এর আগে জানুয়ারি থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত রাজ্যে ৩৩৬৯ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন। মাত্র এক মাসে তা বেড়ে হয়েছে ১৩ হাজারে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, শুধু অগস্ট মাসেই রাজ্যে ১০ হাজার মানুষের ডেঙ্গি হয়েছে। তা উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য কর্তারা। চিকিৎসকদের বক্তব্য, গত বছরেও অগস্ট মাসেই ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত হয়েছিল। এবছরও এই মাসে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা একইভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।