কলকাতা পুরসভার শিক্ষা বিভাগে কি দুর্নীতি হয়েছে? এমন প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্য–রাজনীতিতে। ধর্মের নামে ফায়দা বা লিঙ্গ পরিচয় দিয়ে এমন দুর্নীতি ঘটেছে বলে অভিযোগ। তবে এসব করে কখনওই নিষ্কৃতি পাওয়া যাবে না এবং অন্যায় করলে শাস্তি পেতে হবেই। এমনই মন্তব্য করেছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কলকাতা পুরসভার শিক্ষা বিভাগের দুর্নীতিতে অভিযুক্ত রুমানা খাতুনের করা ইমেল নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তার প্রেক্ষিতেই এমন কথা জানান মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? কলকাতা পুরসভার শিক্ষা বিভাগে সম্প্রতি দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ উঠেছে তৎকালীন সিনিয়র এডুকেশন অফিসার রুমানা খাতুন–সহ আরও দুই প্রাক্তন অফিসারের বিরুদ্ধে। তাই এদেরকে আগেই শো–কজ করেছেন কর্তৃপক্ষ। তারপর সেপ্টেম্বর মাসের ৫ তারিখে রুমানা খাতুন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইমেল করেন। সেখানে তাঁর অভিযোগ, সংখ্যালঘু মহিলা অফিসার বলে তাঁকে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। এই চিঠির বিষয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘অন্যায় করলে শাস্তি পেতে হবে। লিঙ্গ পরিচয় বা ধর্মের দোহাই দিয়ে নিস্তার মিলবে না। কোনও অভিযোগ জমা পড়লে পুর কমিশনার তা যাচাই করে দেখবেন। আর সত্যি প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ঠিক কোথায় ঘটেছে গড়মিল? কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল। এই বছরগুলির মধ্যে কলকাতা পুরসভা পরিচালিত ৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শৌচাগার সংস্কার হয়। সেখানে ৩৮ লক্ষ টাকার গরমিল ধরা পড়েছে। আর তা নিয়ে পুরসভার ভিজিল্যান্স সংশ্লিষ্ট বিভাগের থেকে রিপোর্ট তলব করেছে। এমনকী তখন টেন্ডার ছাড়া প্রায় দু’কোটি টাকার বর্ষাতি এবং স্কুলের পোশাক কেনার ক্ষেত্রে গরমিল ধরা পড়েছে পুরসভার অডিট রিপোর্টে। মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মেয়রের ওএসডি’র বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন অভিযুক্ত রুমানা।
আরও পড়ুন: কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ বাঁশবেড়িয়া পুরসভার বিরুদ্ধে, মামলা কলকাতা হাইকোর্টে
আর কী জানা যাচ্ছে? এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রুমানা খাতুন জানান, তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। আর কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে টপকে রুমানা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লেখায় বেজায় চটেছেন ফিরহাদ হাকিম বলে সূত্রের খবর। তাঁর কথায়, ‘আমরা যে পদক্ষেপ করছি সেটাতে অনেকের স্বার্থে আঘাত লাগছে। জনগণের টাকা নয়ছয় করে কেউ পার পাবেন না। কমিশনার এবং কর্মীদের কাছে স্পষ্ট নির্দেশ আছে। আইন অনুযায়ী কাজ করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীকে যে কেউ চিঠি লিখতেই পারেন। তবে মানুষের স্বার্থে কাজ করাটাই বড় কথা।’