কলকাতা পুরসভা ইতিমধ্যেই বাজেট পেশ করেছে। তাতে জনস্বার্থে বহু পদক্ষেপ করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এবার কলকাতা শহরের মানুষ এবং যাঁরা প্রত্যেকদিন নানা জেলা থেকে এখানে এসে অফিস–কাছারি, স্কুল–কলেজ থেকে শুরু করে নানা কাজে যোগ দেন সেই তুলনায় শৌচালয়ের সংখ্যা অত্যন্ত কম। পুরুষদের শৌচালয় থাকলেও মেয়েদের ক্ষেত্রে তেমন সুবিধা বেশি নেই। সুতরাং রাস্তায় বেরিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন মহিলারা। কলকাতা পুরসভা এই সমস্যার কথা অনুধাবন করে এবার ভ্রাম্যমাণ শৌচালয় চালু করল। মেয়েদের জন্য এই পৃথক ব্যবস্থায় অচিরেই সমস্যা মিটবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে উৎসব–পার্বণ–মেলা এমন নানা ইস্যু থাকলে বাড়তি ভিড় হয় কলকাতা শহরে। নিউ মার্কেট, হাতিবাগান, গড়িয়াহাট–সহ নানা জায়গায় মানুষের ভিড় বেশি হয়। তার সঙ্গে তো অফিস–কাছারি, স্কুল–কলেজ ও শপিং তো রয়েছেই। এই ভিড় হওয়া আবহে ঘুরবে ভ্রাম্যমাণ শৌচালয়। ইতিমধ্যেই মঙ্গলবার প্রথম মহড়া হিসাবে এমন একটি শৌচালয় তিলোত্তমায় পথে নামানো হয়েছে। এবার ধীরে ধীরে এই ধরনের শৌচালয়ের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর। আর তা বাড়লে মহিলাদের সমস্যা অনেকটাই মিটবে বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, শহরের বাসিন্দা থেকে শুরু করে কর্মসূত্রে কলকাতায় আসা অনেক মহিলাই পুরসভার কন্ট্রোল রুমে এবং ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে শৌচালয় বৃদ্ধির আর্জি জানান। সম্প্রতি বেহালা, কাঁকুরগাছি, গড়িয়াহাট থেকে ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে ফোন আসে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কাছে। ওই ফোনে মহিলারা বলেন, ‘শহরের রাস্তায় শৌচালয়ের সংখ্যা কম। তার উপর দুর্গাপুজো, বড়দিনের মতো উৎসবে রাস্তায় বেরিয়ে বড্ড সমস্যায় পড়তে হয়। শহরের রাস্তায় নতুন করে শৌচালয় তৈরির মতো জায়গা না থাকলে বিদেশের মতো ভ্রাম্যমাণ শৌচালয় চালু করা হোক।’ এই কথা শুনেই পদক্ষেপ করেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। আর তারপরই লাগাতার ভ্রাম্যমাণ শৌচালয় চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: কলকাতা পুরসভার হলুদ লাইনকে থোরাই কেয়ার, নতুন করে বসে পড়ল হকাররা
এছাড়া কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, ২০২৪ সালের মধ্যেই ২৫টি ভ্রাম্যমাণ শৌচালয় চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই অত্যন্ত খুশি মহিলারা। এই বিষয়ে মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) স্বপন সমাদ্দার বলেন, ‘বহুদিন ধরেই মহিলাদের অনেকে ভ্রাম্যমাণ শৌচালয় চালুর দাবি জানাচ্ছিলেন। সেই দাবিকে সম্মান জানিয়ে একটি ভ্রাম্যমাণ শৌচালয় চালু হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে আরও ৫টি চালু হবে।’ কলকাতা পুরসভার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন মহিলারা। এবার এই সমস্যা মিটে যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা। এখানে থাকছে—একসঙ্গে চারজন মহিলার ব্যবহার করার ব্যবস্থা, বিনামূল্যে তা করতে পারবেন, বেবি ফিডিংয়ের জন্য পৃথক ব্যবস্থা এবং মিলবে স্যানিটারি ন্যাপকিন।