বড়বড় বিদ্যুৎ বিপর্যয় হয়েছে? জাতীয় গ্রিডে বিভ্রাট দেখা গিয়েছে? বিস্তীর্ণ এলাকায় কারেন্ট চলে গিয়েছে? তারপরও সুড়ঙ্গের নীচে থমকে যাবে না মেট্রো। বরং ঘণ্টায় ১৫-২০ কিলোমিটার বেগে মেট্রো চলতে পারবে। অর্থাৎ কখন বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঠিক হবে, কখন ফের বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হবে, সেজন্য টানেলের ঘুটঘুটে অন্ধকারে অপেক্ষা করতে হবে না যাত্রীদের। বরং যাত্রীদের নিয়ে ছুটতে পারবে মেট্রো। খুব তাড়াতাড়ি এমনই পরিকাঠামো গড়ে তুলছে কলকাতা মেট্রো। কলকাতা মেট্রোর নর্থ-সাউথ করিডরে বসানো হচ্ছে 'ব্যাটারি এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম' (বেস)। যা ভারতের কোনও মেট্রো করিডরে নেই। সেজন্য ইতিমধ্যে দরপত্র হাঁকা হয়েছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষের আশা, এক বছরের মধ্যে সেই কাজ শেষ হয়ে যাবে। তার ফলে কম পরিমাণে বিদ্যুৎ কিনতে হবে। ওই প্রক্রিয়া পুরোদমে কাজ করতে শুরু করলে বছরে ৪০ লাখ টাকার মতো সাশ্রয় হবে মেট্রোর।
কলকাতা মেট্রোর তরফে জানানো হয়েছে, অ্য়াডভান্সড কেমিস্ট্রি সেলের ব্যাটারি এবং ইনভার্টারের যোগসূত্রে সেই 'ব্যাটারি এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম' (বেস) কাজ করে। যা জাতীয় গ্রিডের বিভ্রাট বা বড়সড় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের সময়ও মেট্রোকে সচল রাখবে। প্রাথমিকভাবে নর্থ-সাউথ মেট্রো করিডরের যতীন দাস পার্ক, সেন্ট্রাল, শ্যামবাজার এবং নোয়াপাড়া সাবস্টেশনে চারটি 'ব্যাটারি এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম। গত শুক্রবার লিথিয়াম আয়রন ফসফেট ব্যাটার বা লিথিয়াম টাইটেনিয়াম অক্সাইড ব্যাটারি ব্যবহার করে চারটি বিশেষ ধরনের চার মেগাওয়াটের ইনভার্টার বসানোর জন্য টেন্ডারও ডাকা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Kolkata Metro Special gate: ১ মিনিটে ৪৫ জন যাত্রী, মেট্রোতে নয়া গেট, সেজে উঠছে হাওড়া ময়দান স্টেশন
মেট্রোর কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, 'ব্যাটারি এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম'-র আওতায় নর্থ-সাউথ মেট্রো করিডর চলে আসার পর কোনও একটি নির্দিষ্ট সাব-স্টেশন থেকে যে কোনও স্টেশনে কীভাবে বিদ্যুৎ পাঠানো হবে, সেটার ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করে ফেলেছেন মেট্রোর ইঞ্জিনিয়াররা। সুড়ঙ্গের মধ্যে থাকার সময় বিদ্যুৎ বিপর্যয় হলে ওই মেট্রোগুলিকে সচল রাখার জন্য ১১ কেভি রিঙের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পাঠানো হবে। চারটি জায়গায় এক মেগাওয়াটের ইনভার্টার বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। যা ব্যাটারির শক্তিকে এসি ৩-ফেজের বিদ্যুতে রূপান্তরিত করবে।
যে সিস্টেমের ফলে বছরে কমপক্ষে ৪০ লাখ টাকার মতো সাশ্রয় হবে বলে জানিয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। মেট্রোর তরফে জানানো হয়েছে, রাতে ওই ব্যাটারি সিস্টেমে চার্জ দেওয়া হবে। যা দৈনন্দিন পরিষেবার সময় সচল থাকবে। সঙ্গে 'ব্যাটারি এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম' ব্যবহারের ফলে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণও কমবে বলে মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে।