গত কয়েক বছরে কলকাতা পুরসভায় আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। সেই সংকট মেটাতে ইদানিং একের পর এক বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। পার্কিং ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর নবান্নের নির্দেশে তা প্রত্যাহার করতে হয়েছিল পুর কর্তৃপক্ষকে। নতুন অর্থবর্ষে ট্রেড লাইসেন্স ফি বাড়ানোর পরেও ব্যবসায়ীদের চাপে পড়ে অবশেষে তা প্রত্যাহার করতে হয়েছে। বারবার সিদ্ধান্ত থেকে কিছু হটায় পুরসভার প্রশাসনিক দৃঢ়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এরকম দৃঢ়তা দেখাতে না পারলে পুরসভা আদৌও কি আর্থিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পুর প্রশাসনেরই একাংশ।
সোমবার মেয়র পরিষদের বৈঠক হয়েছে। তাতে সিদ্ধান্ত হয়েছে ৫০০ বর্গফুটে কম জায়গায় যাঁরা ব্যবসা করছেন, তাঁদের বর্ধিত ট্রেড লাইসেন্স ফি না দিলেও চলবে। আগের হারেই তারা ফি দিতে পারবেন। মূলত সাফাই খরচ যুক্ত করাই ট্রেড লাইসেন্স ফ্রি একধাক্কায় বেড়ে গিয়েছিল পাঁচগুন। এ নিয়ে শহরের ছোট ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ বেড়েছিল। তার প্রতিবাদে সোমবার পুর কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন বিজেপির তিন কাউন্সিলর।
তাঁদের দাবি, বর্ধিত লাইসেন্স ফি প্রত্যাহার করতে হবে। তারপরেই মেয়ের পরিষদের বৈঠক হয়। তাতে ঠিক হয় ৫০০ বর্গমিটারের মধ্যে যাঁরা ব্যবসা করছেন, তাঁদের জঞ্জাল ফি দিতে হবে না। এই সিদ্ধান্তের ফলে পুরসভা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন পুর কর্তাদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, পুরসভার আর্থিক সংকট মেটাতে পার্কিং ফি এবং ট্রেড লাইসেন্স ফ্রি বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করায় পুরসভা আর্থিকভাবে আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
প্রসঙ্গত, কলকাতা পুরসভায় ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার কোটি টাকারও বেশি। গতবারের পুর বাজেটে সে কথা জানিয়েছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পার্কিং ফি বাড়লে সেক্ষেত্রে পুরসভার আর্থিক ঘাটতি অনেকটাই মেটানো সম্ভব হতো বলে মনে করছেন আধিকারিকরা। ফলে এই সিদ্ধান্তে চিন্তিত পুরসভার অর্থ বিভাগের আধিকারিকরা।
অন্যদিকে, বর্ধিত ট্রেড লাইসেন্স ফি প্রত্যাহার প্রসঙ্গে পুরসভার এক আধিকারিক জানান, এই সিদ্ধান্তের ফলে অনেক ব্যবসায়ী দেখাতে চাইবেন যে তাঁদের দোকানের আয়তন ৫০০ বর্গফুটের মধ্যে রয়েছে। পাশাপাশি অনলাইনে আবেদন করে ট্রেড লাইসেন্স নেওয়ার ক্ষেত্রেও কারচুপির আশঙ্কা করছেন পুরসভা আধিকারিকরা। সেক্ষেত্রে জায়গা ঠিকমত পরিদর্শন করা উচিত বলে মত আধিকারিকদের।
উল্লেখ্য, ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, শুধুমাত্র জঞ্জাল ফি যুক্ত করা হয়েছে। তবে জঞ্জাল ফি আগের থেকে বেড়েছে। মেয়র আরও জানান, ৫০০ বর্গফুটের মধ্যে ব্যবসা করলে আগের হারে লাইসেন্স দিলে হবে। যদিও এর ফলে পুরসভার আয় কমবে না বলে জানিয়েছেন মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) দেবব্রত মজুমদার।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup