মানসিক রোগে আক্রান্ত মদন মিত্র। তিনি কি বিধায়ক থাকার যোগ্য? এই প্রশ্ন তুলে বিধানসভার স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করার ব্যাপারে বিবেচনা করছে বিজেপি। হিন্দুস্তান টাইমসকে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে এমনই জানালেন শিলিগুড়ির বিধায়ক শংকর ঘোষ। তিনি বলেন, মদনবাবু নিজে জানিয়েছেন, তাঁর অ্যালঝাইমার্সের উপসর্গ দেখা দিয়েছে। ২৪ ঘণ্টার পুরনো কথা মনে থাকছে না তাঁর। এরকম অসুস্থ মানুষ কী করে বিধানসভায় বিল পাশের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অংশগ্রহণ করবেন?
শংকর ঘোষ বলেন, মদন মিত্র বিধায়ক থাকার যোগ্য কি না এই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ওনার স্বাস্থ্যপরীক্ষা করিয়ে এব্যাপারে আইনানুগ পদক্ষেপ করতে বিধানসভার স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে বিজেপি। একজন মানসিকভাবে অসুস্থ মানুষ বিধি মেনে বিধানসভার সদস্য থাকতে পারেন না। কারণ মানসিক অসুস্থতা নিয়ে জনপ্রতিনিধিত্ব ও বিল পাশের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলানো অসম্ভব। এই রকম অসুস্থ একজন মানুষ বিধানসভার সদস্য থাকলে জনগণের বিপদ হতে পারে। তাই আমরা মদন মিত্রের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার দাবি জানাতে চলেছি। বিধানসভার বিধিপুস্তক খতিয়ে দেখে এব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিজেপির পরিষদীয় দল।
মুকুল রায়ের মানসিক স্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও কেন শুধুমাত্র মদন মিত্রের ব্যাপারেই পদক্ষেপ করতে চলেছে বিজেপি? এই প্রশ্নের জবাবে শংকরবাবু বলেন, মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে দলত্যাগবিরোধী আইন প্রয়োগের দাবি জানিয়েছে বিজেপি। যদিও স্পিকার তাতে সম্মতি দেননি। এই নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। কিন্তু মুকুল রায় নিজে কখনও তাঁর মানসিক ভারসাম্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি। মদন মিত্র নিজে সংবাদমাধ্যমের সামনে স্বীকার করেছেন যে তাঁর অ্যালঝাইমার্সের উপসর্গ দেখা দিয়েছে। ২৪ ঘণ্টার পুরনো কথা মনে থাকছে না তাঁর। এই রকম ক্ষীণ স্মৃতিতে আক্রান্ত ব্যক্তিকে জনপ্রতিনিধির পদ থেকে অবিলম্বে অব্যহতি দেওয়া উচিত।
গত ২০ মে রাতে কলকাতার SSKM হাসপাতালে এক রোগীকে ভর্তি করতে যান মদন মিত্র। কিন্তু শয্যা খালি না থাকায় তাঁকে ব্যর্থ হয়ে ফিরতে হয়। এর পরই SSKM ও দলের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তোলেন তিনি। এমনকী বিধায়কপদে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। পরদিন মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মদনের বিরুদ্ধে থানায় বিশৃঙ্খলা তৈরি করার অভিযোগে FIR করে SSKM কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে যখন বিতর্ক চরমে তখন কুণাল ঘোষের সঙ্গে দেখা করেন মদন। রবিবার রাতে কুণালের সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে বেরিয়ে মদন মিত্র রবিবার রাতে ও সোমবার সকালে বলা সমস্ত কথা অস্বীকার করেন। বলেন, ‘এরকম কোনও কথা বলেছিলাম না কি? আমার মনে নেই। আমার অ্যালঝাইমার্সের উপসর্গ দেখা দিয়েছে। মুকুল দার রোগে ধরেছে আমায়’।