লকডাউনের মেয়াদ বাড়লেও রাজ্যের জুটমিলগুলি চালু করার সিদ্ধান্ত নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বুধবার রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, মিলগুলিতে আপাতত ১৫% কর্মীদের দিয়ে কাজ চালাতে হবে।
কেন্দ্রের তরফে একাধিক বার অনুরোধ আসার পরে সীমিত সংখ্যক কর্মীদের দিয়ে রাজ্যের জুটমিলগুলি চালু করার সিদ্ধান্ত নিল বাংলার সরকার।
যদিও শিল্পমহলের একাংশের দাবি, বেশিরভাগ মিল কর্তৃপক্ষই মাত্র ১৫% কর্মী দিয়ে মিল চালানোর বিষয়ে রাজি হবে না, কারণ তাতে যা খরচ দাঁড়াবে, তার চেয়ে মিল বন্ধ রাখা ভালো। তা ছাড়া, কর্মীসংখ্যা সীমিত হওয়ায় শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দানা বাঁধতে পারে বলেও তাঁদের ধারণা।
বুধবার মমতা বলেন, ‘মিল চালু করার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি এবং মহারাষ্ট্র ও তেলেঙ্গানা থেকেও ফোন পেয়েছি। রাজ্যে ফসল তোলার সময়ও এসে গিয়েছে। এখন কাজ করতে না দিলে পাটের জায়গা নেবে প্লাস্টিক।’
কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী অবশ্য গত ১৩ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা তাঁর চিঠিতে রাজ্যের ১৮টি জুটমিল খোলার বিষয়ে অনুরোধ জানিয়েছিলেন, এবং সেই মিলগুলির নাম করে চিহ্নিত করেও দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে মিলের ২৫ শতাংশ কর্মীকে বহালের কথা লিখেছিলেন। কিন্তু তার জেরে রাজ্যের প্রতিটি জুটমিলই চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র ১৮টি জুটমিল চালু করলে তা অবিচার হবে। এই কারণে আমরা প্রতিটি মিলই চালু করতে বলেছি এবং সেখানে ১৫ শতাংশ কর্মীকে একদিন অন্তর কাজ করার অনুমতি দিয়েছি। তবে তার জন্য সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে, যার মধ্যে রয়েছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক ব্যবহার ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা।’
উল্লেখ্য, রাজ্যে বর্তমানে ৬০টি জুটমিল রয়েছে, যাতে প্রায় ২ লাখ কর্মী কাজ করেন। প্রতি মিলে গড়ে ৩,০০০ কর্মী কাজ করেন।
রাজ্যের এক জুটমিল কর্তা জানিয়েছেন, শুধুমাত্র মিলের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের কাজেই ১৫% কর্মী প্রয়োজন হয়। তাঁর দাবি, সীমিত সংখ্যক কর্মীর সাহায্যে উৎপাদিত সামগ্রী বিক্রি করে যে পরিমাণ অর্থ পাওয়া যাবে, তা কর্মীদের বেতন দিতেও যথেষ্ট হবে না।
আর এক মিলকর্তা জানিয়েছেন, প্রায় ৮০% কর্মী মিলের আশপাশেই বসবাস করেন। মাত্র ১৫% কর্মীকে কাজে বহাল করলে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি দেখা দিতে পারে।
এই পরিথিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে মিল চালু করলে যে নতুন বিপদ তৈরি হবে, তা নিয়েই শঙ্কিত রাজ্যের শিল্পমহল।