সুনীতি একাডেমি। ফের মেধাতালিকায় জ্বলজ্বল করছে কোচবিহারের সরকারি এই স্কুলের নাম। অতীতে যে স্কুল নারীশিক্ষায় আলোকবর্তিকাকে তুলে ধরেছিল সেই স্কুল ফের জানিয়ে দিল বাংলার শিক্ষাক্ষেত্রে তার উজ্জ্বল উপস্থিতি। এবারও একাধিক ছাত্রী উচ্চমাধ্যমিকে রাজ্যের মেধাতালিকায় স্থান করে নিয়েছে।
স্কুল সূত্রের জানা গিয়েছে এবার সব মিলিয়ে ১২৯জন পরীক্ষা দিয়েছিলেন। এখনও পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ রেজাল্ট জানা যায়নি। তবে মোটের উপর অত্যন্ত ভালো ফল করেছে এই স্কুলের ছাত্রীরা।
এই স্কুলের টিচার ইন চার্জ মৌমিতা রায় হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে জানিয়েছেন, বরাবরই ভালো রেজাল্ট করে আমাদের স্কুল। আমি এই স্কুলেরই ছাত্রী ছিলাম একটা সময়। আমরা জানি কীভাবে ভালো ফলের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হয়। প্রতি ছাত্রীর পড়াশোনার প্রতি আমরা নজর দিই। সেই সঙ্গেই গার্জেনদের সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখি। কার কোথায় সমস্যা হচ্ছে, কোথায় আরও জোর দিতে হবে এটা আমরা সবসময় গার্জেনদেরও সচেতন করি। এতে অনেকটা সুবিধা হয়। এবার আমাদের স্কুলের কয়েকজন অল্পের জন্য মেধা তালিকায় স্থান পায়নি। তবে সার্বিক রেজাল্ট বেশ ভালো।
এই স্কুলেরই প্রতীচি রায় তালুকদার রাজ্য়ের মেধা তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে। তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৩। কোচবিহার শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে থাকে সে। বাবা প্রণব রায় তালুকদার জেনকিন্স স্কুলের শিক্ষক। নিয়ম করে পড়াশোনা করত সে। সাত জন গৃহশিক্ষক ছিল। গান করতে ভালোবাসে সে। বড় হয়ে চিকিৎসক হতে চায় প্রতীচি।
উচ্চমাধ্য়মিকে মেধাতালিকায় ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছে সুনীতি আকাডেমির কলা বিভাগের ছাত্রী মনস্বী চন্দ। তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৯১। আগামী দিনে অধ্য়াপনা করতে চায় সে। পড়াশোনার পাশাপাশি নাচতে ভালোবাসে। ক্রিকেট খেলা দেখতেও ভালোবাসে মনস্বী। মন দিয়ে পড়াশোনা, ধ্রুপদী নাচের তালিম সব কিছুর মধ্য়েই বেশ ব্যালান্স করে চলেছে মনস্বী।
তবে শুধু প্রতীচি বা মনস্বীই নয়, সুনীতি আকাডেমি এবারও নজরকাড়া ফলাফল করেছে। ১৮৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্কুল। কোচবিহার শহরেই রয়েছে এই স্কুল। এই স্কুলে শহরের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী নানা গ্রাম থেকে পড়তে আসে ছাত্রীরা। কথিত আছে মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ এই স্কুলের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন( উইকিপিডিয়া তথ্য)। মহারাণী সুনীতি দেবীর নামে নামকরণ করা হয়েছিল এই স্কুলের। বহু বিখ্য়াত ব্যক্তিত্ব এই স্কুলে এসেছেন অতীতে।
এই স্কুল থেকে পাশ করা একাধিক ছাত্রী বর্তমানে নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। এবারও সেই ধারাবাহিক উজ্জ্বল ফলাফলের শরিক থাকল সুনীতি আকাদেমি।