করোনা অতিমারি কেড়ে নিয়েছে অনেক কিছুই। কিন্তু তা বলে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া অ-আ-ক-খ. আম, জাম পড়তে পারবে না? আসলে এটাই হয়েছে বাংলায়। Annual status of Education Report (ASER) এ এমনই হতাশার ছবি সামনে এসেছে এবার। করোনা অতিমারিতে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল স্কুল। পড়াশোনাও কার্যত লাটে ওঠে। আর তারই মাসুল গুনতে হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের। তৃতীয় শ্রেণির ৩০ শতাংশেরও কম সংখ্যক পডুয়া দ্বিতীয় শ্রেণির বই পড়তে পারছে। সব থেকে আশ্চর্যের কথা অষ্টম শ্রেণির ৭০ শতাংশ পড়ুয়া দ্বিতীয় শ্রেণির বই পড়তে পারছে। বাকিরা পড়েছে মহা সমস্য়ায়।
সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে রাজ্য়ের পঞ্চম শ্রেণির ৮৫ শতাংশ পড়ুয়া আম,আপেল, কলার মতো অতি সাধারণ শব্দও পড়ে উঠতে পড়ছে না। কার্যত চর্চার অভাবে অক্ষরজ্ঞানও হারিয়ে ফেলেছে অনেকেই। বানান করে শব্দ কিংবা বাক্য পুরোটা পড়াতো দূরের কথা কিছু অক্ষরও চিনতে পারছে না। রাজ্যের ১৭টি জেলায় ৫১০টি গ্রামে ১১ হাজার ১৮৯জন পড়ুয়ার মধ্যে গত ডিসেম্বরে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। ২০১৮ সালের সমীক্ষার সঙ্গে ২০২১এর পড়াশোনার মানের মধ্যেও বিচার করে মাথায় হাত শিক্ষাবিদদের। ২০১৮ সালে প্রথম শ্রেণি স্তরের সরল বাক্য যেমন 'গরমে আম পাওয়া যায়' এটা ৭৩.২ শতাংশ পড়ুয়া বানান করে পড়তে পারত। ২০২১ সালে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৬.৩ শতাংশ।
বিজ্ঞান ও অঙ্কের অবস্থা আরও খারাপ। প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত বহু পড়ুয়া ১ থেকে ৯ পর্যন্ত সংখ্যা ভুলে গিয়েছে। ২০১৮ সালে সপ্তম শ্রেণিতে এই সংখ্যা ছিল ১ শতাংশ। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় আড়াই শতাংশ। ১-৯ পর্যন্ত সংখ্যা না চেনার শতাংশ প্রথম শ্রেণিতে ৩০ শতাংশ, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১২.৬ শতাংশ, তৃতীয় শ্রেণিতে ৯.২ শতাংশ, চতুর্থ শ্রেণিতে ৬.৭ শতাংশ, পঞ্চম শ্রেণিতে ৫.২ শতাংশ, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৫.৩ শতাংশ।