পঞ্চায়েত ভোটের আগে টিকিট না মেলায় শাসকদলের অনেকেই বিদ্রোহ ঘোষণা করে নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। জেলায় জেলায় নবজোয়ার কর্মসূচিতে সেই সমস্ত বিক্ষুব্ধদের কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তৃণমূলে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, পঞ্চায়েত ভোটের ফল ঘোষণা হতেই এবার জয়ী বিক্ষুদ্ধদের নিয়ে মনোভাব নরম করার ইঙ্গিত দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তাতেই আপত্তি জানিয়েছেন তৃণমূলের একাংশ। দলের অনেকেরই আশঙ্কা বোর্ড গঠনের সময় নির্দলদের পাশাপাশি বিরোধী বিজেপি, সিপিএম বা কংগ্রেস সদস্যদের দলে নেওয়া হলে সে ক্ষেত্রে নিচের তলায় থাকা কর্মীদের মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
আরও পড়ুন: ‘হিসেব দিয়ে তবেই নির্দলে দাঁড়াবেন’, কীসের খতিয়ান জানতে চেয়ে হুমকি উদয়নের?
উল্লেখ্য, নবজোয়ার কর্মসূচিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিক্ষুব্ধদের কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তারপরেও বিদ্রোহ আটকানো যায়নি। টিকিট না পেয়ে অনেকেই নির্দল থেকে ভোটে দাঁড়ান। এই অবস্থায় ভোটের পরে বিক্ষুব্ধদের দলে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় তৃণমূলের অন্দরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রসঙ্গত, পুরসভা ভোটে দেখা গিয়েছিল টিকিট না পেয়ে অনেকে দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে নির্দল প্রার্থী হয়েছিলেন। নির্বাচনে জয়ের পর বিক্ষুব্ধদের আবার দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলার নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা তৃণমূল নেতৃত্ব এবং বিধায়করা মনে করছেন বিক্ষুব্ধদের দলে ফিরিয়ে আনলে জটিলতা তৈরি হতে পারে।যদিও তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘নির্দলদের বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন দলীয় নেতৃত্ব। যাঁরা নির্দলে গিয়েছিল তাঁরা সকলেই তৃণমূলের হয়ে কাজ করেছেন। মনোনয়ন তুলে নেওয়ার সময় পাননি। এখন জিতে গেছেন দল বিষয়টি বিবেচনা করে দেখবে।’
প্রসঙ্গত, এবার পঞ্চায়েত ভোটে নির্দিষ্ট আসন থেকে প্রায় ১২ হাজার অতিরিক্ত মনোনয়ন জমা পড়েছিল তৃণমূলের। তারপরে বিক্ষুব্ধদের তৎপরতার বিষয়টি বুঝতে পেরে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন অভিষেক। তিনি জানিয়েছিলেন, তৃণমূলে তাঁদের ফেরানো হবে না। জেলায় জেলায় বিক্ষুব্ধদের শাস্তি ঘোষণা করেন। তিনি নিজে জানিয়েছিলেন প্রায় ২০০০ এর বেশি বিক্ষুব্ধকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই অবস্থায় তাঁদের দলে ফেরালে দলের অন্দরে ক্ষোভ তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন দলেরই একাংশ। তৃণমূলের এক জেলা সভাপতি জানিয়েছেন, ‘দলের কর্মী সমর্থকরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করেছেন এবং জিতেছেন। এই অবস্থায় নির্দলদের ফেরানো হলে তাদের কাছে বড় ধাক্কা হবে। এটা খুব খারাপ হবে।’
শুধু পঞ্চায়েত সমিতিতে কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএম বহু আসন জিতেছে। সেই সমস্ত বিজয়ীদের দলে নিয়ে বোর্ড গঠন করা হলেও জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে বলে মনে করছেন দলের একাংশ। সে ক্ষেত্রে দলের ক্ষতি হতে পারে বলে তাঁদের অনুমান।