পুরসভার স্কুলে শৌচাগার সংস্কারের নামে দুর্নীতি হয়েছিল। সেই দুর্নীতি-কাণ্ডে ইতিমধ্যেই কলকাতা পুরসভার তিন আধিকারিককে শো-কজ করা হয়েছে। এবার তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করতে চলেছে পুরসভা।
ইতিমধ্যেই তিন আধিকারিকের বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। চার্জ গঠনের পর নিয়ম মাফিক তিনজনের শুনানিও হবে পুরসভা পার্সোনেল বিভাগে।
আনন্দবাজারে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুরসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, স্কুলে শৌচাগার নির্মাণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসতেই, সংশ্লিষ্ট কাজের সঙ্গে যুক্ত তিন আধিকারিককে শো-কজ করা হয়।
সেই শো-কজের জবাবে সন্তুষ্ট নয় পুরসভা। তদন্তে উঠে এসেছে, শৌচাগার নির্মাণ নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে এবার চার্জ গঠন করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৭ থেকে ’২০ সালের মধ্যে কলকাতা পুরসভা অধীনস্থ ৫০ টি স্কুলের ৬৩টি শৌচাগার সংস্কার হয়। কিন্তু তদন্তে দেখা গিয়েছে, সেই কাজ নিয়ম মেনে হয়নি।
কাজ চলাকালীন স্কুলে নোটিস টাঙানোর কথা। কিন্তু দেখা গিয়েছে কোনও স্কুলেই এই নোটিস দেওয়া হয়নি।
স্কুলের উন্নয়ন কমিটিকে অন্ধকারে রেখে সমস্ত কাজ করা হয়েছিল। এমন কি কাজ চলাকালীন এবং শেষে পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারের পরিদর্শনে যাওয়ার কথা ছিল। কোনও স্কুলেও তাঁরা যাননি বলে অভিযোগ।
স্কুলের প্রধান শিক্ষকদেরও সই নকল করার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। বেশ কয়েকটি স্কুল শিক্ষকরা জানিয়েছেন, স্কুলের প্যাডও নকল করে ছাপিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
এই সব অভিযোগ পাওয়ার পর পুরসভা বিভাগীয় তদন্ত শুরু করে। তদন্তে দেখা যায় শৌচাগার নির্মাণকে কেন্দ্র করে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। তাই অভিযুক্ত তিন আধিকারিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে চাইছে পুর কর্তৃপক্ষ।
এরই মধ্যে তৎকালীন এক আধিকারিক রুমানা খাতুন মুখ্যমন্ত্রীকে ইমেল করেন। তিনি অভিযোগ জানান. যেহেতু তিনি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের, তাই তাঁকে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে।
এই ইমেল নিয়ে মেয়রের বক্তব্য, অন্যায় করলে শাস্তি পেতে হবে। অভিযোগ এলে পুরকমিশনার নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত করেন। সত্যতা প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
তবে এ ক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষকদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইঞ্জিনিয়ারদের পরিদর্শন ছাড়াই কী করে শিক্ষকরা সই করে ছাড়পত্র দিলেন, তাও প্রশ্নের মুখে।
তিন পুর আধিকারিকের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তা শেষ হলেই তিনজনকে ওই চার্জশিট পাঠানো হবে। তারপর শুনানি শুরু হবে। এখানে বিচারকের ভূমিকায় থাকবেন পুরসভা নিযুক্ত এক আধিকারিক।