গত কয়েকদিন ধরেই অপমানের অভিযোগ তুলেছিলেন যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। তিনি বৃহস্পতিবার বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে দেখা করতে যেতে পারেন বলে জল্পনা ছড়িয়েছিল। তবে সূত্রের খবর, এদিন দুপুরে তিনি বিধানসভায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান। অনেকের মতে, তবে কি এবার দেবের পথে হেঁটে তিনি নেত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন?
তবে সূত্রের খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কাছে তিনি ইস্তফাপত্র দিয়েছেন সংসদ পদ থেকে। পরে তিনি এটি সাংসদের স্পিকারকে দিতে পারেন। তবে মমতা এই ইস্তফাপত্র গ্রহণ করতে চাননি। পরিষেবা দিতে গিয়ে তিনি যে বাধা পেয়েছেন সেটা তিনি নেত্রীকে জানিয়েছেন। সূত্রের খবর, তাঁকে গালাগালি শুনতে হয়েছে। তাঁর হাজিরা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হত। তিনি এই অপমান সহ্য করতে রাজি নন। এমনকী তিনি আর যে রাজনীতি করতে চান না সেটাও কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় টিকিট দিয়েছিলেন তাই তাঁর কাছেই ইস্তফাপত্র। কাজ করতে গিয়ে সমস্যা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন বলে খবর।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দলের স্থানীয় কিছু নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর যে বনিবনা হচ্ছে না একথাই নাকি তিনি জানাতে চান মুখ্যমন্ত্রীকে। একেবারে দেবের স্টাইলে। সাংসদ দেবের সঙ্গেই ঘাটালে একাধিক নেতৃত্বের সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল। তাদেরকে( সেই নেতৃত্বকে) সরিয়ে দিতেই ফের দিদির প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে ফের তৃণমূলের রাজনীতিতে গা ভাসিয়ে দেন। তবে কি এবার দেবের স্টাইল সফল হতেই মিমি সেই পথে হাঁটতে শুরু করলেন? নাহ তেমনটা এখনও নয়। তিনি আরও কড়া অবস্থান নিচ্ছেন।
সম্প্রতি সংসদের দুটি স্ট্যান্ডিং কমিটি থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন যাদবপুরের সাংসদ। এমনকী তাঁর লোকসভায় থাকা স্বাস্থ্য়কেন্দ্রের রোগী কল্যান সমিতির চেয়ারম্যানের পদ থেকেই ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। সংসদের শিল্প বিষয়ক স্ট্য়ান্ডিং কমিটির সদস্যের পদ থেকে ও কেন্দ্রীয় শক্তি মন্ত্রক ও নবীন ও পুনর্নবীকরণযোগ্য বিদ্যুৎ কমিটির যৌথ কমিটির সদস্য পদ থেকেও সরে গিয়েছেন তিনি। এরপরই মিমিকে ঘিরে জল্পনা একেবারে তুঙ্গে ওঠে। এবার এমপি পদ থেকেই ইস্তফা।
এদিকে সূত্রের খবর, অভিনেত্রী সাংসদ মিমি চক্রবর্তী নাকি তীব্র অপমানিত হয়েছেন। এনিয়ে তিনি মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিলেন বলেও খবর। এনিয়ে তিনি দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন বলে খবর। সেই চিঠিতে নাকি তিনি তাঁর ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন বলে খবর। তারই পরিপ্রেক্ষিতে নেত্রীর তরফে মিমিকে ডেকে পাঠানো হয় বলে খবর। সব মিলিয়ে লোকসভা ভোটের মুখে ফের জল্পনার পারদ চড়ছে।
তবে এই ঘটনার মধ্য়ে অনেকেই দেবের স্টাইল দেখতে পাচ্ছেন। ঠিক যেভাবে অভিমানের কথা উল্লেখ করে দেব একের পর এক কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। এমনকী পরবর্তীতে তিনি ভোটে লড়বেন কি না তা নিয়ে রীতিমতো দ্বিধার কথা জানাচ্ছিলেন।