কলকাতা পুরসভায় প্রশাসনি বোর্ড গঠনে ৬৩৪ ধারার অপব্যবহার করেছে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার এমনটাই জানাল কলকাতা হাইকোর্ট। তবে প্রশাসনিক বোর্ডের বৈধতা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি আদালত।
গত বুধবার নবান্ন থেকে এক নির্দেশিকায় কলকাতা পুরসভার কাজ কর্ম পরিচালনার জন্য প্রশাসনিক বোর্ড গঠন করে রাজ্য সরকার। করোনার জেরে পুর নির্বাচন না হওয়ায় কলকাতা পুরবোর্ডের মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছিল। এর পর বিদায়ী মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে শীর্ষে বসিয়ে প্রশাসনিক বোর্ড গঠন করে সরকার। সেখানে কলকাতা পুরসভার রিমুভাল অফ ডিফিকাল্টিজ আইনকে হাতিয়ার করে তারা। সরকারের এই পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে মামলা হয়। সেই মামলায় আপাতত ১ মাস এই প্রশাসনিক বোর্ড কাজ চালিয়ে যাবে বলে রায় দেয় সিঙ্গল বেঞ্চ। এর পর শুক্রবার কলকাতার মুখ্য প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ফিরহাদ।
সিঙ্গল বেঞ্চের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে এর পর হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন মামলাকারী। সেই মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, কলকাতা পুরসভার প্রশাসনিক বোর্ড গঠনে ৬৩৪ ধারার অপব্যবহার করেছে সরকার।
আদালতের এই পর্যবেক্ষণের পর ফিরহাদ হাকিম-সহ তাঁর পারিষদদের পদে থাকার নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। আদালত প্রশাসনিক বোর্ডকে অবৈধ ঘোষণা না করলেও তা গঠনের পদ্ধতিকে বেআইনি ঘোষণা করেছে।
বলে রাখি, রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তাঁর দফতরের সচিবই তাঁকে প্রশাসনিক বোর্ডের প্রধান ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। সঙ্গে বোর্ডে রাখা হয়েছে বিদায়ী ১৪ জন মেয়র পারিষদকেও।
রাজ্যসভার সাংসদ তথা সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, কোনও জনপ্রতিনিধি ৫ বছর দায়িত্ব পালনের পর সংবিধান অনুসারে তার আর সেই বা সমতুল কোনও পদে থাকার অধিকার নেই। ফিরহাদকে প্রশাসনিক বোর্ডের মাথায় বসিয়ে সংবিধানের সেই নির্দেশ লঙ্ঘন করেছে সরকার। সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, এই বোর্ড গঠনে ৬৩৪ ধারা প্রয়োগ করে বাড়াবাড়ি করে ফেলেছে সরকার।