এবার খাস কলকাতার বুকে ঘটে গেল অমানবিক ঘটনা। এক মহিলা শৌচাগারে যান প্রস্রাব করতে। কিন্তু তখনই গর্ভে থাকা শিশুর প্রসব হয়ে যায়। আর সদ্যজাত শৌচালয়ে গড়াগড়ি খেতে থাকে। এই ঘটনা দেখে অবসাদে ভুগতে থাকেন মহিলা। এই অবস্থায় সদ্যোজাতকে জানালা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেন মা। মর্মান্তিক এবং অমানবিক এই ঘটনাটি নিয়ে জোর আলোড়ন পড়ে গিয়েছে পিকনিক গার্ডেন এলাকায়। মা তাঁর সদ্যজাত সন্তানকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে পারেন এটা কেউ কল্পনাও করতে পারছেন না। ওই শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি।
ঠিক কী ঘটেছে পিকনিক গার্ডেনে? স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই মহিলার নাম নিকোলা স্ট্যানিসলস। শনিবার তিনি শৌচালয়ে গেলে হঠাৎই সন্তান প্রসব করেন। এমন পরিস্থিতি দেখে তিনি অবসাদে ভুগতে থাকেন। আর জানালা দিয়ে সদ্যজাতকে বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দেন। প্রতিবেশীরা শৌচালয়ের জানালার কাচ ভাঙার আওয়াজ পেয়ে তাকাতেই দেখেন নীচে কিছু একটা পড়ে আছে। কাছে যেতেই দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় একটি শিশু পড়ে আছে। এই সদ্যজাত পুত্রসন্তান। গর্ভবতী হলেও সেটা সম্পর্কে মহিলা অবহিত ছিলেন না বলেই দাবি করেছেন। কারণ তাঁর ঋতুচক্রও নিয়মিতই ছিল বলে দাবি। এমন ঘটনায় তিনি চমকে যান এবং ছুঁড়ে ফেলে দেন একরত্তিকে।
আর কী জানা যাচ্ছে? কয়েকজন প্রতিবেশীরা জানান, ওই অভিযুক্ত মহিলা বাথরুমে এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। আর হতচকিত হয়ে বাথরুমের জানালা গিয়ে বাচ্চাটিকে ছুঁড়ে ফেলে দেন তিনি। ওই মহিলার শরীর থেকে তখন রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। এই অবস্থায় মহিলা এবং তাঁর নবজাতককে ইএম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। গোটা রাত নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে রেখেও বাঁচানো যায়নি। রবিবার শিশুর মৃত্যু হয়।
ঠিক কেন এমনটা ঘটল? নিকোলা স্ট্যানিসলস এবং অ্যান্ডি স্ট্যানিসলসের সঙ্গে লিভ ইন সম্পর্কে ছিলেন। ২০২২ সাল থেকে এভাবেই চলে আসছিল। তবে সবাইকে পরিচয় দিতেন তাঁরা স্বামী–স্ত্রী বলে। পরে পারিপার্শ্বিক চাপে পড়ে গতবছর নভেম্বর মাসে বিয়ে করেন তাঁরা। স্ত্রী যে গর্ভবতী হয়ে পড়েছেন সেকথা জানতেন না তাঁরা বলে দাবি স্বামীর। এমনকী নিকোলা নিজেও গোটা বিষয়টি বুঝতে পারেননি। আর তা থেকেই এমন ঘটনা ঘটেছে। যদিও কসবা থানায় নিকোলার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।