সরকারি হাসপাতালে প্রায়ই অমানবিক ছবি ধরা পড়ে। চিকিৎসা করাতে গিয়ে বিস্তর হয়রানির অভিযোগ সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে প্রায়ই ওঠে। আর সেই সঙ্গে বেড না।পাওয়ার সমস্যা তো রয়েইছে। একজন সাধারণ রোগীকে বেড পাওয়ার জন্য যেখানে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয় সেখানে নেতা-মন্ত্রীদের বা হেভিওয়েটরা সঙ্গে সঙ্গে বেড পেয়ে যান। বিশেষ করে রাজ্যের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএমে এই ধরনের সমস্যা অনেক বেশি। সেই হাসপাতালে বেড না পেয়ে এক রোগীকে ফিরিয়ে দিয়েছিল হাসপাতাল। অবশেষে সেই রোগীর বিনামূল্যে চিকিৎসা করে মানবিক মুখ দেখাল তারকেশ্বরের একটি নার্সিংহোম।
আরও পড়ুন: ভেটকি মাছের ৩ ইঞ্চি কাঁটা আটকে গিয়েছিল গলায়, SSKM–এর তৎপরতায় রক্ষা রোগীর
জঙ্গিপাড়া থানার বোমনগরের ১১ বছরের এক নাবালকের বিনামূল্যে চিকিৎসা করল নার্সিংহোম। নির্দিষ্ট সময় চিকিৎসা না পেলে হয়তো নাবালক পঙ্গু হয়ে যেতে পারত। জানা গিয়েছে, গত ১৪ নভেম্বর বাড়িতে খেলার সময় দোলনা থেকে পড়ে যায় ওই নাবালক। তার জেরে শিরদাঁড়ায় মারাত্মক চোট পায় রুদ্র কর্মকার নামে ওই নাবালক। প্রথমে তাকে জঙ্গিপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে রেফার করা হয় সিঙ্গুর হাসপাতালে। এরপর শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সেই হাসপাতালে নিউরো সার্জেন্ট না থাকায় তাকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়। সেই মতো তাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, সেখান থেকে আবার এসএসকেএম হাসপাতালে রেফার করা হয়। এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে রেফারের জন্য কার্যত বিনা চিকিৎসায় কেটেছিল এই কয়েকটা দিন। চিকিৎসকেরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, দ্রুত অস্ত্রোপচার না হলে সে ক্ষেত্রে পঙ্গু হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তার জন্য ভর্তির বহু চেষ্টা করেছিলেন নাবলকের অভিভাবকরা।অভিযোগ, এসএসকেএম হাসপাতালে অনেকেই টাকার বিনিময়ে ভর্তি করাতে চেয়েছিলেন। তবে এত পরিমাণ টাকা জোগাড় করা সম্ভব হয়নি । কার্যত চিকিৎসা না পাওয়ার কারণে নাবলকের পরিবার
শেষে এক আত্মীয়র কাছ থেকে তারকেশ্বরের চাঁদাপাড়ার ওই ছোট্ট নার্সিংহোমের কথা জানতে পারেন। নাবলকের পরিবার সেখানেই তাকে নিয়ে যান। জানা যায়, ওই নার্সিংহোমের ৪ জন চিকিৎসকের একটি দল গঠন করে নাবালকের অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করেন। তবে এর জন্য নাবালকের পরিবারের কাছ থেকে কোনও অর্থ নেয়নি নার্সিংহোম। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দ্রুতই নাবালক স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবে। এ বিষয়ে চিকিৎসক ডা. শীর্ষেন্দু খেটোর মতে, আঘাত পাওয়ার ৫ দিন ধরে চিকিৎসা হয়নি। আরও বেশি দিন হলে সে ক্ষেত্রে রোগী পঙ্গু পর্যন্ত হয়ে যেতে পারত।