এক ছাদের তলায় এসে বৃহত্তর শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে রাজি। কিন্তু পরস্পরের ছবি দেখতে অনীহা। রাজনীতির অলিন্দে এখন এমন দৃশ্যই ধরা পড়েছে। পাটনায় বিরোধী জোটের বৈঠকের পর যুযুধান দুই দলের প্রকাশিত দৈনিক মুখপত্রে জোটসঙ্গীদের ছবি নিয়ে একটা পার্থক্য লক্ষ্য করা গিয়েছিল। বেঙ্গালুরুতে বিরোধী জোটের দ্বিতীয় বৈঠকের পরও সেই পার্থক্য পাল্টাল না। আজ, মঙ্গলবারও বেঙ্গালুরুতে চলছে ‘দেশ বাঁচানোর বৈঠক’। তবে আগামীকাল বুধবার দু’টি দলের মুখপত্রে পরিবর্তন ঘটবে কিনা সেটা প্রকাশ পেলেই দেখা যাবে। এই দুটি দল হল—সিপিএম এবং তৃণমূল কংগ্রেস।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? আজ, মঙ্গলবার তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্রের প্রথম পাতায় ছবি দেওয়া হয়েছে সোনিয়া গান্ধী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সিপিএমও তাঁদের দৈনিক মুখপত্রে ছবি ছেপেছে— সোনিয়া, মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং সীতারাম ইয়েচুরির। সুতরাং যুযুধান প্রতিপক্ষ পরস্পরের দৈনিক মুখপত্রে জায়গা পাননি। কিন্তু তাঁরা এক ছাদের তলায় বৃহত্তর স্বার্থে লড়াই করার শপথ নিচ্ছেন। তাই এই বৃহত্তর স্বার্থ পরিণতি পাবে কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ এখনই যদি পরস্পর নমনীয় হতে না পারেন তাহলে দেশ বাঁচানোর লড়াই কি সফল হবে? উঠছে প্রশ্ন। তবে আজও হাসি মুখে সবাই বৈঠকে যোগ দেবেন।
ঠিক কে, কি বলছেন? এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে শাসক– বিরোধীকে। এই বিষয়ে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘সিপিএমের মুখপত্রে মমতার ছবি ছাপতে হবে সেটা কোথায় ঠিক হল? তৃণমূল আগে বিজেপির সঙ্গে ঘর করেছিল। তাই বিজেপি বিরোধী স্তরে ওদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। আমাদের সেই দায় নেই।’ পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়ের মতে, ‘দলীয় মুখপত্রে কোন ছবি ছাপা হবে, সেটা আমি ঠিক করি না। প্রত্যেক দলগুলির নিজস্ব অবস্থান থাকে।’ কিন্তু এতে তো অঙ্ক মিলছে না। এক এক জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান নিয়ে আবার এক মেরুতে ফেরা মানুষ কতটা মেনে নেবে সেটা ভাববার বিষয়।
আরও পড়ুন: ‘কি রাজনীতি রে ভাই!’, বিরোধীদের বেঙ্গালুরুর বৈঠক নিয়ে টুইট খোঁচা শুভেন্দুর
আর কী জানা যাচ্ছে? এই বিরোধীদের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, স্থানীয় সমস্যার জন্য সর্বভারতীয় স্তরের প্রেক্ষাপটে প্রভাব পড়বে না। তাই শাসক–বিরোধী মুখপত্রে পরস্পরের নেতা–নেত্রীদের ছবি জায়গা না পেলেও বিজেপিকে হটাতে একসঙ্গে কাজ চলবে। তাই সিপিএমের মুখপত্রে সীতারাম ইয়েচুরির যে বক্তব্য ছাপা হয়েছে তা হল, ‘বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতা নয়। সেখানে তৃণমূল–বিজেপির বিরুদ্ধে বামপন্থীরা, কংগ্রেস এহং ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলি একসঙ্গে লড়বে।’ রাজ্য কংগ্রেসের একটু চাপ বেড়েছে। কারণ মমতা–সোনিয়ার পাশাপাশি ছবি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। তারপর থেকেই প্রদেশ কংগ্রেসের নেতারা চুপ করে আছেন।