পাক চর সন্দেহে এসটিএফের জালে ধৃত ভক্তবংশী ঝা হানিট্র্যাপের মহিলাকে প্রি– অ্যাক্টিভেটেড সিমের পাসওয়ার্ড সরররাহ করত। তার জন্য মোটা টাকাও পেত সে। পাকিস্তানি মহিলারা এখানকার আইএসআই এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত ভুয়ো সিম দিয়ে। কলকাতা পুলিশের এসটিএফ এই তথ্য পেয়েছে। ভক্তবংশী এই সিম কোথা থেকে পেত? তদন্ত শুরু হয়েছে। নয়াদিল্লির পাশাপাশি কলকাতারও নানা গুরুত্বপূর্ণ স্থান, মূল্যবান সব স্থাপত্যের ছবি এবং ভিডিয়োও পাচার করেছে পাকিস্তানি গুপ্তচর সন্দেহে ধৃত ভক্তবংশী ঝা। বিহারের দ্বারভাঙা জেলার ওই বাসিন্দা হানিট্র্যাপের ফাঁদে পড়ে তথ্য পাচার করেছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের।
এদিকে ভক্তবংশী ঝা নয়াদিল্লির একটি ক্যুরিয়ার সংস্থায় কাজ করত। তারপর কলকাতায় বদলি হয়ে চলে এসে হাওড়া শহরে ঘরভাড়া নিয়ে থাকে। ওই যুবক গত তিন মাস ধরে ছবি এবং ভিডিয়ো পাঠাতেও থাকে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এসটিএফ–এর এক পদস্থ অফিসার বলেন, ‘কলকাতার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানের ছবি তুলেছে ওই যুবক। কিন্তু নিরাপত্তার স্বার্থে আপাতত বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না। ওই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই হানিট্র্যাপের ফাঁদে আরও কেউ পড়েছেন কি না? খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ এসটিএফের জেরায় অভিযুক্ত জানিয়েছে, ভুয়ো নথি দিয়ে তাকে প্রি–অ্যাক্টিভেটেড সিম কিনতে বলা হয়। সিম প্রতি ৮০০–১০০০ টাকা মিলেছে। ওই নম্বরে আসা পাসওয়ার্ড পাঠিয়েছে সেই পাক মহিলার কাছে এবং বিনিময়ে ভাল টাকাই রোজগার হয়েছে।
অন্যদিকে এসটিএফ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত ভক্তবংশীর কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা মোবাইল ফোন পরীক্ষা করা হচ্ছে। এই ভক্তবংশী ঝায়ের সঙ্গে এক তরুণীর পরিচয় হয়। ওই তরুণী নিজেকে পাঞ্জাবের বাসিন্দা বলে পরিচয় দেয়। ওই তরুণীকে ব্যবহার করেই পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা ভক্তবংশীকে হানিট্র্যাপের ফাঁদে ফেলে। ভক্তবংশীকে কাজে লাগিয়ে নযাদিল্লি–কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হয়। হানিট্র্যাপের মহিলারা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নিজের প্রোফাইল খুলছে এই সিম ব্যবহার করেই। বন্ধুত্বের টোপ দিয়ে মেসেজ পাঠানোর পর যোগাযোগের জন্য ভারতীয় নম্বর দিচ্ছে তারা। থাকছে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজিং অ্যাপ। ভারতীয় সিম দিয়ে খোলা এই অ্যাপে ফাঁদে পড়া তরুণদের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘উজবুক রাজ্যপাল সব উপাচার্য পাল্টে দিচ্ছেন’, কড়া ভাষায় বিঁধলেন সাংসদ সৌগত
আর কী জানা যাচ্ছে? ওই যুবককে জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে আর গুরুত্বপূর্ণ জায়গার ছবি তাকে পাঠানোর বরাত দেওয়া হয়েছিল। এখানে জড়িত আরও কয়েকজনের বিষয়েও তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। ভক্তবংশীর বক্তব্য যাচাই করে দেখা হচ্ছে। এই সিম আইএসআই কর্তাদের কাছেও যাচ্ছে। তারা এগুলি ব্যবহার করে এদেশে চরবৃত্তি করছে। কয়েকমাস পরই বদলে ফেলা হচ্ছে নম্বরটি। অস্তিত্বহীন ব্যক্তির নথি দিয়ে সিম ব্যবহার করে মেসেজিং অ্যাপ খোলায় জানাই যাচ্ছে না কারা ব্যবহার করছে সিমগুলি।