রাজ্যপাল বনাম শিক্ষামন্ত্রীর সংঘাত এখন দেখতে পাচ্ছেন রাজ্যবাসী। বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে শিক্ষা দফতরের দ্বৈরথ লেগেই রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা পর্যন্ত করেছে রাজ্য সরকার। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, রাজ্যপাল যেন রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে উপাচার্য নিয়োগ করেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সমালোচনা করেছেন রাজ্যপালের। এবার বেনজির আক্রমণ করলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়। বিজেপি যোগ নিয়েও খোঁচা দিতেই প্রবীণ সাংসদের সমালোচনা করেছে বিজেপি–সিপিএম। যার জেরে তেতে উঠেছে রাজ্য–রাজনীতি।
ঠিক কী বলেছেন তৃণমূল সাংসদ? পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে শুরু করে দত্তপুকুরের ঘটনায় রাজ্যপালকে বারবার সক্রিয় হতে দেখা গিয়েছে। আবার অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করতে গিয়ে তিনি সরিয়ে রেখেছেন রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে। এই আবহে প্রবীণ তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘একজন উজবুক রাজ্যপালকে পাঠিয়েছে।’ এদিন এই ভাষাতেই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে বেনজির আক্রমণ করলেন তিনি। আর এরপরই রে রে করে নেমে পড়েছে বিজেপি। পাল্টা সৌগত রায়ের সমালোচনা করতে থাকেন বিজেপি নেতারা।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত এখন চরমে উঠেছে। সংঘাত বেড়ে যায় রাজ্যের ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগের পর থেকে। বিবৃতি জারি করে সেই নিয়োগের কথা জানায় রাজভবন। তখন ট্যুইটে আচার্যের অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগকে বেআইনি বলে আক্রমণ করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তার মধ্যেই সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে বুদ্ধদেব সাউকে নিয়োগ করেন রাজ্যপাল। নয়া উপাচার্যের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে তুমুল শোরগোল পড়ে যায়। এই প্রেক্ষাপটে এবার রাজ্যপালকে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়।
আরও পড়ুন: ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সন্ন্যাসীর রহস্যমৃত্যু, নেপথ্যে কোন ঘটনা উঠে আসছে?
আর কী বলেছেন সাংসদ? অন্যদিকে সৌগত রায় এবার সরাসরি উপাচার্য নিয়োগে রাজনীতির যোগের অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর কথায়, ‘তিনি জোর করে বিজেপি পার্টি করে এমন একজন লোক, বুদ্ধদেব সাউ তাঁর নাম কোনও দিন শুনিনি, তাঁকে উপাচার্য করেছেন। একজন উজবুক রাজ্যপালকে পাঠিয়েছে। তিনি প্রত্যেক উপাচার্যকে পাল্টে দিচ্ছেন। নিজের ইচ্ছেমতো উপাচার্য নিয়োগ করছেন। আমি এই সভা থেকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের তীব্র নিন্দা করছি। আমার ধারণা আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ২৮ অগস্ট একই কথা বলবেন।’ পাল্টা সমালোচনা করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘তৃণমূলে যারাই যায়, তারা অশিক্ষিত হয়ে যায়। রাজ্যপাল কোনও দলের হন না। রাজ্যপাল রাজ্যপালই হন।’