গ্রেফতারের বর্ষপূর্তি তো হয়েই গেল। গত বছর এই ২১শে জুলাইয়ের পরেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এরপর অর্পিতার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় কোটি কোটি টাকা। কারোর ফ্ল্যাটে এত টাকা থাকতে পারে সেই প্রথম দেখেছিল বঙ্গবাসী। চমকের শুরু তখন থেকেই। তবে এই টাকা কীভাবে সেখানে এল তার কোনও সদুত্তর এখনও জানতে পারেননি অনেকেই।
সেই সময় গ্রেফতার হন পার্থ-অর্পিতা। এরপর এক বছর ধরে জেলের আড়ালেই দিন কাটছে তাদের।মাঝেমধ্য়ে আদালতে যাতায়াতের পথে দেখা যায় পার্থকে। আর অর্পিতা কালেভদ্রে জেল থেকে বেরিয়ে আদালতে আসেন। কিন্তু কেমন আছে তৃণমূলের সেই হেভিওয়েট প্রাক্তন মহাসচিবের নাকতলার সেই বাড়ি? কেমন আছে অর্পিতার দামী ফ্ল্যাট?
পার্থর নাকতলার বাড়ি বছর খানেক আগেও বেশ জমজমাট থাকত। মন্ত্রীর এলাকা বলে কথা। সব সময় ব্যস্ততা। নেতাদের যাতায়াত। পুলিশের পাহারা। কিন্তু সেসব আজ অতীত। এখন যাতায়াতের পথে মাঝেমধ্যে কেউ কেউ একবার পার্থর বাড়ির দিকে তাকিয়ে দেখেন। যে তৃণমূল কর্মীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতেন মন্ত্রীর জন্য তারা এখন আর ফিরেও তাকান না বাড়ির দিকে। এক বছরের মধ্যে ছবিটা বেমালুম বদলে গিয়েছে। এই নাকতলার বাড়ি থেকেই গ্রেফতার হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
ডায়মন্ড সিটি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল অর্পিতাকে। টালিগঞ্জের ডায়মন্ড সিটির ফ্ল্যাট ও বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট মিলিয়ে প্রায় ৪৯ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল সেই সময়। বর্তমানে সেই ফ্ল্যাটের দরজায় টাঙানো আছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নোটিশ। কার্যত সিল করে দেওয়া হয়েছে এই ফ্ল্যাটকে। সেই এক বছর ধরে কার্যত তালাবন্ধ এই ফ্ল্যাট। আর কেউ ফিরেও দেখেন না। জেলের আড়ালেই দিন কাটে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের বান্ধবীর। একটা সময় প্রভাবশালীদের সঙ্গে অর্পিতার যোগাযোগ ছিল বলে মনে করা হয়। তবে সেসব আজ অতীত।আজ আর পাশে কেউ নেই। এই ফ্ল্যাট কার্যত শুনশান হয়ে পড়ে রয়েছে। কবে ফের আসবেন অর্পিতা জানা নেই কারোর।
তবে শুধু কলকাতাতেই নয়, শান্তিনিকেতনেও পার্থ-অর্পিতার বাড়ি রয়েছে বলে খবর। সেই বাড়ির সামনে আজও লেখা রয়েছে অপা। কিন্তু সেই বাড়িতেও গত একবছর ধরে কোনও অতিথির আর পা পড়ে না। একজন কেয়ারটেকার দম্পতি আগে থেকেই এই সম্পত্তির দেখাশোনা করতেন। তারা এখনও সেখানে দেখাশোনা করেন। কিন্তু আগে যেমন নির্দিষ্ট সময় অন্তর তারা পারিশ্রমিক পেতেন এখন আর সেসব হয় না। তবুও দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তারা। তবে বিদ্যুতের বিল বকেয়া থাকার জেরে সেই বাড়ির লাইন কেটে দেওয়া হয়েছে বলে খবর।