শিক্ষা ক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছিল অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের। তাঁর ফ্ল্যাট থেকে মিলেছিল কোটি কোটি টাকা। দীর্ঘ দিন ধরে তিনি জেলেই রয়েছেন। তবে এবার রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে নাম উঠে এল অর্পিতার। জানা গিয়েছে, অর্পিতাকে অভিনেত্রী থেকে 'নেত্রী' বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন 'বন্ধু' পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব নাকি দলের কাছে দরবার করেছিলেন অর্পিতার হয়ে। পুরভোটে বান্ধবীকে টিকিট পাইয়ে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে পার্থর সেই স্বপ্নেই জল ঢেলেছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। (আরও পড়ুন: টিউশন পড়িয়েই ৩.৩৭ কোটি টাকা আয় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কন্যা প্রিয়দর্শিনীর!)
ইডির দাবি, উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটি পুরসভার একটি ওয়ার্ড থেকে অর্পিতাকে কাউন্সিলরের টিকিট পাইয়ে দিতে চেয়েছিলেন পার্থ। উল্লেখ্য, অর্পিতার আদিবাড়ি বেলঘরিয়াতেই। এখানেই তাঁর একটি ফ্ল্যাট থেকে দ্বিতীয় দফার তল্লাশিতে মিলেছিল কোটি কোটি টাকা। তবে রিপোর্ট অনুযায়ী, পার্থর সেই ইচ্ছের ওপর জল ঢেলেছিলেন সতীর্থ জ্যোতিপ্রিয়। উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় তৃণমূলের 'সর্বেসর্বা' ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। এই আবহে বালুক এক 'না'-তেই অর্পিতার নেত্রী হওয়া আটকে যায়।
আরও পড়ুন: অর্পিতার সিনেমার পরিচালক ছিলেন খাদ্য দফতরের কর্মী! গল্প লিখেছিলেন এক আধিকারিক
এদিকে অর্পিতার নেত্রী হওয়ায় বাধ সাধলেও অর্পিতার সঙ্গে বালুর দূরের যোগ খুঁজে পেয়েছে ইডি। জানা গিয়েছে, রেশন বণ্টন দুর্নীতির টাকায় বাকিবুরের প্রযোজনায় তৈরি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন পার্থর বান্ধবী। তদন্তকারীদের দাবি, ২০১৪ সালে বাকিবুর রহমান প্রযোজিত একটি বাংলা চলচ্চিত্রে কাজ করেছিলেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। সেই সিনেমায় দেখা গিয়েছিল বলিউডের এক অভিনেত্রীকেও। এছাড়া সেই সিনেমায় নাইজেল সহ টলিউডের বেশ কয়েকজন চেনা মুখকে দেখা গিয়েছিল। ছিলেন রাখি সাওয়ান্তও।
ইডির তরফে জানানো হয়েছে, নানা ভাবে রেশন দুর্নীতির টাকা বাকিবুর ও অন্যান্যদের মাধ্যমে বিনিয়োগ করেছেন জ্যোতিপ্রিয়। এমনকী ঘনিষ্ঠদের নামে বহু নামি ও বেনামি সম্পত্তি কিনেছেন তিনি। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বাকিবুর রহমানের অন্তত ১০০ কোটির সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে। নামে - বেনামে, আত্মীয়দের নামে এই বিপুল সম্পত্তি। এগুলি রেশন দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করার জন্য করা হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, অন্তত ৬টি সংস্থায় শেয়ার রয়েছে বাকিবুরের। সেই শেয়ার মিলিয়েই বাকিবুরের সম্পত্তি প্রায় ৫০ কোটি। নিউ টাউন, রাজারহাট, পার্কস্ট্রিটে একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে তার। বাকিবুরের একাধিক হোটেল, পানশালাও রয়েছে। বিদেশেও তার সম্পত্তি রয়েছে বলে খবর।