সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভারতীয় ডাক বিভাগ বিভিন্ন সময়ে বিকল্প পথে হেঁটে আয় বাড়িয়েছে। আয় বাড়াতে গঙ্গার পবিত্র জল বিক্রি করছে ডাক বিভাগ। তাতে এখনও পর্যন্ত বেশ ভালই সাড়া মিলেছে। ডাক বিভাগ মারফত দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এখন পৌঁছে যাচ্ছে গঙ্গার জল। সেই উদ্যোগ সফল হওয়ার পর এবার গঙ্গাসাগরের জল বিক্রি করার উদ্যোগ নিল ভারতীয় ডাক বিভাগের কলকাতা রিজিয়ন। গঙ্গাসাগরের জলের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ফলে গঙ্গাসাগরের জল বিক্রি করলে আয় বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া সাধারণ মানুষও উপকৃত হবেন। সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডাক বিভাগ।
আরও পড়ুন: রেল ও ইন্ডিয়া পোস্টের নয়া উদ্যোগ! পাবেন কোন অফার, কী কী সুবিধা? জানুন
সাধারণত মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নান এবং মেলা ছাড়াও সারাবছরই গঙ্গাসাগরে বহু মানুষ এবং পূণ্যার্থীর যাওয়া আসা লেগেই থাকে। অনেকেই গঙ্গাসাগরের পবিত্র জল বোতলে করে বাড়ি নিয়ে যান। কিন্তু, সকলের পক্ষে গঙ্গাসাগরে যাওয়া সম্ভব হয় না। ফলে সেই সমস্ত মানুষরা এবার অনায়াসেই পোস্ট অফিস মারফত গঙ্গাসাগরের জল বাড়িতে পেয়ে যাবেন। কলকাতা রিজিয়নের পোস্টমাস্টার জেনারেল সঞ্জীব রঞ্জন জানিয়েছেন, ‘আমরা গঙ্গাসাগরের জল বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের কাছ থেকে এ বিষয়ে আমরা অনুমোদন পেয়েছি। কীভাবে এই জল বিক্রি করা হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে। ভেন্ডারদের সঙ্গে কথা চলছে। তারপরে আমরা দ্রুত এই জল বিক্রি করা শুরু করে দেব।’ তবে মাটি মাখা জল দেওয়া হবে না পরিষ্কার জল দেওয়া হবে সে বিষয়ে এখনও ঠিক হয়নি তার ভিত্তিতে দাম নির্দিষ্ট করা হবে বলে ডাক বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, পার্সেল ডেলিভারি, স্ট্যাম্প ও পোস্টেজ বিক্রি এবং সেভিংস ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আয় করে থাকে ডাক বিভাগ যদিও সেভিংস অ্যাকাউন্ট বাবদ যে অর্থ জমা পড়ে সেটি অর্থমন্ত্রকের আওতায় পড়ে। তবে সেই বাবদ কিছু কমিশন নেয় ডাক বিভাগ। এর পাশাপাশি জীবন বিমা, পোস্টাল লাইফ ইনসিওরেন্স বিক্রির মাধ্যমে আয় করে থাকে ডাক বিভাগ। সারা ভারতে প্রায় ১ লক্ষ ৫৯ হাজার ডাকঘর রয়েছে। এই ডাকঘরের প্রশাসনিক কাজকর্ম চালানোর জন্য বিপুল সংখ্যক কর্মীও রয়েছে। সবমিলিয়ে এরজন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয় যোগাযোগ মন্ত্রককে। তাই বিকল্প আয়ের কথায় চিন্তাভাবনা করছে ডাক বিভাগ। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, গঙ্গাজলের মতোই গঙ্গাসাগরের জলও একই পদ্ধতিতে বিক্রি করা হবে। সাধারণত ২৫০ মিলিলিটার জল বাবদ ৩০ টাকা করে নিয়ে থাকে ডাক বিভাগ। অনলাইনে অর্ডার করলে তাতে খরচ পড়ে ১২১ টাকা। ডাক বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে প্রায় ৭ লক্ষ ২৩ হাজার গঙ্গাজলের বোতল বিক্রি হয়েছে। তাতে কয়েক কোটি টাকা আয় হয়েছে। গঙ্গাসাগরের জল বিক্রি হলে সেই আয় আরও কিছুটা বাড়বে বলে মনে করছেন ডাক বিভাগের আধিকারিকরা।