রানাঘাট দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী গতকাল যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসে। আর এরপরই তাঁকে আক্রমণ শানালেন বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। এক্স হ্যান্ডেলে এক পোস্ট করে মুকুটমণির বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে সরব হলেন শুভেন্দু। প্রসঙ্গত, স্বস্তিকা ভুবনেশ্বরী নামে এক যুবতী অভিযোগ করেন, রেজিস্ট্রি বিয়ে করেও সামাজি ভাবে তাঁকে স্ত্রীয়ের পরিচয় দিচ্ছেন না বিধায়ক। এমনকী তাঁকে ডিভোর্সের জন্যেও চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে মুকুটমণির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন সেই তরুণী। গতবছর তিলজলা থানায় এফআইআর করা হয়েছিল এই মর্মে। সেই এফআইআর-এর তথ্য তুলে ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন শুভেন্দু। রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ককে নিয়ে শুভেন্দুর কথায়, জেলে যাওয়ার থেকে তৃণমূলে যাওয়া শ্রেয় বলে মনে করেছেন মুকুটমণি অধিকারী। (আরও পড়ুন: ৭৫ হলেই কি প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়বেন মোদী? নমোর 'অবসর' নিয়ে বড় আপডেট দিলেন শাহ)
আরও পড়ুন: মুখে ৩৫, তবে বাংলায় আদতে কটা আসনে জিততে পারে BJP? বাস্তবিক হিসেব দিলেন শাহ
উল্লেখ্য, গতবছরে ২৮ মে বিয়ের জন্য পাত্রীর পিকনিক গার্ডেনের বাড়িতে উপস্থিত হয়েছিল মুকুটমণি অধিকারীর পরিবারের সদস্যরা। এরপর অভিযোগ ওঠে, বিয়ের ঠিক পরদিন থেকেই স্ত্রী স্বস্তিকা ভুবনেশ্বরীকে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য চাপ দিতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়ক। এমনকী নিজের স্ত্রীকে সামাজিক স্বীকৃতি দিতেও অস্বীকার করেন। স্ত্রীর কাছ থেকে ১ কোটি টাকা দাবি করেছেন বলেও অভিযোগ। তাই বিধায়কের বিরুদ্ধে তিলজলা থানায় এফআইআর দায়ের করেন স্বস্তিকা ভুবনেশ্বরী। মুকুটমণি অধিকারীর বাবা ভূপাল অধিকারী এবং ভাই অনুপম অধিকারীর বিরুদ্ধেও তিলজলা থানায় বধূ নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন স্বস্তিকা। এদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে দলেরই বিধায়কের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে পড়েছিল বিজেপি। (আরও পড়ুন: শাহি সাক্ষাতে চন্দ্রবাবুর, 'বন্ধু' জগনকে ভুলে 'এক্স'-এর সঙ্গে 'প্যাচ-আপ' BJP-র!)
আরও পড়ুন: অবশেষে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে সরকারি কর্মীরা, কেন্দ্রের সঙ্গে এই রাজ্যে আরও বাড়ল
এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, গতবারের লোকসভা ভোটেই রানাঘাট থেকে মুকুটমণি অধিকারীকে প্রার্থী করার কথা ভেবেছিল বিজেপি। কিন্তু রাজ্য সরকারি হাসপাতালের কাজ তিনি ছেড়ে না আসায় শেষ মুহূর্তে তাঁকে প্রার্থী করতে পারেনি বিজেপি। প্রার্থী হন জগন্নাথ সরকার। এরপর গত বিধানসভা নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছিলেন জগন্নাথ সরকার। জিতেও যান জগন্নাথ। পরে অবশ্য বিধানসভা থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। আর গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জগন্নাথ সরকারের এলাকা থেকে বিজেপি পঞ্চায়েত সমিতি দখল করতে সক্ষম হয়েছিল। এই আবহে এবারও রানাঘাটে জগন্নাথকেই প্রার্থী করা হয়। আর লোকসভা নির্বাচনের টিকিট না পেয়েই মুকুটমণি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, রানাঘাট থেকে মুকুটমণিকে লোকসভার প্রার্থী করতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস। নদিয়ার তরুণ ও শিক্ষিত মতুয়া মুখ মুকুটমণি অধিকারী ঘাসফুল শিবিরের জন্য খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সিএএ চাপানউতোরের মধ্যে তাই মতুয়া গড়ে নিজেদের হারানো জমি ফিরে পেতে মুকুটমণিকেই হাতিয়ার করতে চায় তৃণমূল।