কালীঘাটের কাকুকে কয়েকদিন আগে গ্রেফতার করেছে ইডি। তাঁর সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতি ঘটনার সম্পর্ক আছে বলে দাবি ইডির। এবার সেই দুর্নীতির কথা জোর করে স্বীকার করতে চাপ দিচ্ছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের অফিসাররা বলে অভিযোগ করলেন কালীঘাটের কাকু। নিজের আইনজীবীকে দিয়ে আদালতে এমনই কথা জানালেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু। তাই এবার থেকে তাঁকে জেরা করার সময় আইনজীবী উপস্থিত থাকার আবেদন ওই কাকু। আদালতের নির্দেশে আপাতত ১৪ দিনের ইডি হেফাজতে রয়েছেন কাকু। সেখান থেকেই আদালতে তাঁর অভিযোগ, ইডি অসাংবিধানিকভাবে চাপ দিচ্ছে জোর করে দুর্নীতির কথা স্বীকার করতে।
এদিকে এই গোটা বিষয়টি নিয়ে একটি চিঠি আদালতে দিয়েছেন ‘কালীঘাটের কাকু’। তাতে তিনি জানিয়েছেন, ইডি হেফাজতে তাঁকে অসাংবিধানিকভাবে ‘চাপ’ দেওয়া হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলি জোর করে স্বীকার করতে বাধ্য করা হচ্ছে। গোয়েন্দারা তাঁকে কেন এমন ‘চাপ’ দিচ্ছেন? এই নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। ইডির কাজ আর্থিক কেলেঙ্কারি হলে তা তদন্ত করে এবং নথি সংগ্রহ করে তার ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদ করা। সেখানে জোর করে চাপ দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
অন্যদিকে গত ৩১ মে ইডি গ্রেফতার করে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে। ইডির দাবি, তাঁকে জেরা করে শিক্ষক–অশিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে। ব্যবসায়ী সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র–সহ তাঁর পরিচিত এবং সংস্থার নামে অন্তত ৫০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সন্ধান মিলেছে। এই অ্যাকাউন্টগুলির মাধ্যমে নিয়োগ দুর্নীতির বিপুল পরিমাণ কালো টাকা সাদা করা হয়েছে। এই দাবি এবার জোর করে স্বীকার করাতে চাইছেন ইডির অফিসাররা বলে অভিযোগ কালীঘাটের কাকুর। তাই তিনি নিজের আইনজীবী সেলিম রহমানকে পাশে চেয়েছেন।
তারপর ঠিক কী হয়েছে? ওই চিঠিতে কালীঘাটের কাকু আদালতে জানিয়েছেন, ‘কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিওর, ১৯৭৩ সালের ৪১ডি ধারা অনুযায়ী ইডির জিজ্ঞাসাবাদের সময় আইনজীবীকে পাশে পাওয়ার অধিকার রয়েছে তাঁর। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর আইনজীবী ব্যাঙ্কশাল আদালতে ইডির বিশেষ আদালতে আবেদন করে জানান, ইডি আধিকারিকরা তাঁর উপর অসাংবিধানিকভাবে চাপ দিচ্ছেন। যাতে তিনি ইডির আনা অভিযোগগুলি স্বীকার করে নেন। তাই আদালতের কাছে কাকুর আইনজীবী আবেদন জানান, যেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে জেরার সময় তাঁর আইনজীবীকে উপস্থিত থাকতে দেওয়া হয়। পাল্টা ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি এবং ভাস্করপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, জেরার সময় অসাংবিধানিকভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যে। আদালত নির্দেশ দিয়েছে, একদিন অন্তর ৩০ মিনিটের জন্য তিনি তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন।