সরকারি নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অধ্যক্ষকে কাজে যোগ দিতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এমন অভিযোগের কথা জানতে পেরে চরম ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। বিদেশ সফররত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখান থেকেই দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকে কড়া পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন। তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশ পেয়েই তৃণমূল ভবনে বৈঠক ডাকলেন দলের রাজ্য সভাপতি। কড়া ভাষায় আরজি করের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতৃত্বকে বুঝিয়ে দিলেন, এমন কাজ সহ্য় করবে না দল। বরং সোজা ‘ঘাড় ধাক্কা’ দেওয়া হবে। গোটা বিষয়টি নিয়েই এই বৈঠক ডাকা হয় বলে সূত্রের খবর।
এদিকে আরজি কর হাসপাতালে অধ্যক্ষকে বাধা দেওয়া–সহ নানা বিষয়ে অচলাবস্থা চলছিল। আরজি কর হাসপাতালের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের তাই ডাকা হয়েছিল ওই বৈঠকে। সূত্রের খবর, গোপন ওই বৈঠকে ক্ষোভ উগরে দেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি। ‘ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সবাইকে বের করে দেব’, এমন কথাও বলেছেন তিনি ওই বৈঠকে। এমন কাজ যেন ভবিষ্যতে আর না হয়, সে বিষয়েও কড়া নির্দেশ দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ও হাসপাতালের প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক হিসেবে বদলি করা হয়। আর বারাসত মেডিক্যাল কলেজের ডা. মানস বন্দ্যোপাধ্যায়কে আরজি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষ করে আনে স্বাস্থ্যভবন। কিন্তু তিনি কাজে যোগ দিতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন।
অন্যদিকে নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগের পরই অশান্তি শুরু হয়। স্বাস্থ্যভবনের নিয়োগ করা নতুন অধ্যক্ষ মানস বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠতেই শোরগোল পড়ে যায়। তখনই খবর পৌঁছে যায় প্রশাসনিক স্তরে। আর খবর যায় নবান্নেও। অধ্যক্ষের ঘরের সামনে বসে বিক্ষোভ দেখানো হয়। এই খবর পেয়েই তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন সেখানে ছুটে যান। তখন তিনি জানান, রাজ্য সরকার এই ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করবে না। তারপরই ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিয়েছে রাজ্য। গোটা বিষয়টি কানে যেতেই বিদেশ থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো দলের রাজ্য সভাপতিকে ফোন করে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: বাংলার গ্রামকে ভারতসেরা ঘোষণা করল পর্যটন মন্ত্রক, বিদেশ থেকে টুইট মমতার
তারপর ঠিক কী ঘটল? আবার ওই বৈঠকের গোপনীয়তা এতটাই ছিল যে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য এবং জেলা নেতৃত্বকেও কিছু জানানো হয়নি। আরজি কর–সহ বেশ কিছু মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র ইউনিট নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস বলে সূত্রের খবর। ১৮ সেপ্টেম্বর তৃণমূল ভবনে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতৃত্বকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। গোপন বৈঠকের ১০ মিনিটের মধ্যে কড়া ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘কোনও বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না। পার্টি এসব একদম সহ্য করবে না। আবার কোনও কিছু হয়েছে শুনলে ঘাড় ধরে বের করে দেওয়া হবে।’ এমনই খবর মিলেছে সূত্রে।