ইংরেজি হরফে তিন ভাগে লেখা ২১ পাতার চিঠিতে সারদা–কাণ্ডের মূল ষড়যন্ত্রকারীদের কথা উল্লেখ করলেন সুদীপ্ত সেন। গত ১৯ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্সি জেল থেকে ওই চিঠি কলকাতা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পেশ করেছেন সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত। তাতে তাঁর দাবি, কখনও তিনি কলকাতা ছেড়ে ফেরার হতে চাননি। কিন্তু এক রাজনৈতিক প্রভাবশালী নেতার চাপে সারদা অর্থ লগ্নি সংস্থা বন্ধ করে কলকাতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন সারদা তছরুপ মামলায় মূল অভিযুক্ত। তাঁর সঙ্গে ছিলেন এই গোষ্ঠীর অন্যতম ডিরেক্টর দেবযানী মুখোপাধ্যায়।
সারদা মামলার কেস রেকর্ডে নথিভুক্ত এই চিঠির প্রতিলিপি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রী, সিবিআইয়ের ডিরেক্টর ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, চিঠিতে তিনটি ভাগে একাধিক বিষয় উল্লেখ করেছেন সুদীপ্ত। প্রথম ভাগে তিনি কীভাবে রাজনৈতিক প্রভাবশালী নেতাদের দ্বারা প্রতারিত হয়েছিলেন তা জানিয়েছেন। এবং পরের দুটি ভাগে তিনি সারদা তৈরির নেপথ্য কাহিনী জানিয়েছেন।
কীভাবে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক প্রভাবশালী নেতাদের হাতে আমানতকারীদের টাকা তুলে দেওয়া হত সে কথাও চিঠিতে লিখেছেন সুদীপ্ত সেন। কোন রাজনৈতিক নেতাকে কখন এবং কবে নগদে এবং ব্যাঙ্ক ড্রাফট ও চেকের মাধ্যমে টাকা দিয়েছেন সেটাও বিস্তারিতভাবে ওই ২১ পাতার ওই চিঠিতে লিখেছেন সুদীপ্ত সেন। তাঁর কথায়, ২০১৩–র এপ্রিল মাসে তাঁকে দিয়ে জোর করে সিবিআইয়ের কাছে চিঠি লিখিয়েছিলেন এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা। এবং সেই নেতার পরামর্শ মেনেই তিনি কলকাতা ছেড়ে ফেরার হন।
সুদীপ্ত সেনের আরও দাবি, কাশ্মীর থেকে তাঁকে গ্রেফতার করার পর সিবিআই এবং ইডি–র তদন্তকারী আধিকারিকদের তিনি সব কিছুই জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, সব কিছু জানানোর পরও কোনও অজানা কারণে মূল ষড়যন্ত্রকারী ও প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে এখনও কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। চিঠির শেষে নিজের শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়েছেন সুদীপ্ত সেন। তাঁর কথায়, তিনি খুবই অসুস্থ। যে কোনও দিন যা কিছু হয়ে যেতে পারে। দ্রুত তদন্ত শেষের আশাও প্রকাশ করেছেন তিনি।