বহু জায়গাতেই নির্দ্বিধায় পানীয় জল অপচয় করা হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা খুলে রাখা হয় কল। যার ফলে পানীয় জল নষ্ট হয়ে নর্দমা বা পুকুরে গিয়ে পড়ে। আবার এমন অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে পরিশুদ্ধ পানীয় জলটুকু পৌঁছয় না। পানীয় জলের জন্য কয়েক কিলোমিটার দূরে যেতে হয় মানুষকে। পানীয় জল অপচয়ের বিষয়টি সর্বত্রই নজরে আসে। অনেক ক্ষেত্রে এ বিষয়ে প্রশাসনিক গাফিলতিও চোখে পড়ে। এমন অবস্থায় জল অপচয় রোধে আইন আনতে চলেছে রাজ্য সরকার। রাজ্য বিধানসভায় বুধবার এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ও কারিগর দফতরের মন্ত্রী পুলক রায়। তিনি জানান, পানীয় জল অপচয় বা চুরি করে অন্য কাজে ব্যবহার বন্ধ করার জন্য আইন আর কথা ভাবছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন: পানীয় জলের জন্য যেতে হয় ৬ কিমি দূরে, অবিলম্বে ব্যবস্থা করার নির্দেশ হাইকোর্টের
বুধবার বিধানসভা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মন্ত্রী পুলক রায় জানান, জল অপচয় বন্ধ করাটা খুবই জরুরী। জল যাতে অন্য কাজে ব্যবহার করা না হয় সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে। জল অপচয় রোধে আইন প্রণয়ন করার কথা চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে, তিনি জানান, প্রত্যেক পরিবারে জল পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলে। তিনি উল্লেখ করেন, সব বাড়িতে জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। আগামী ২০২৫ সালের মার্চ মাসের মধ্যে গ্রামীণ সব এলাকার বাড়িতে জল পৌঁছে দেওয়া হবে। রাজ্যের লক্ষ্য ১ কোটি ৭৩ লক্ষ মানুষের বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া। এছাড়া, কৃষি কাজের জলের জন্য সেচ দফতর রয়েছে। মন্ত্রীর সাফ বার্তা, পানীয় জল শুধুমাত্র পানীয় হিসেবেই ব্যবহার করতে হবে। কোনভাবেও তা অন্য কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
প্রসঙ্গত, জল অপচয় রোধে ইতিমধ্যেই একাধিক পুরসভা এলাকায় মিটার বসানো হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার বেশ কয়েকটি পুরসভায় পানীয় জলের অপচয় বন্ধে মিটার বসানো হয়েছে। তবে এই মিটার বসানো।নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। অনেকের দাবি , মিটার বসালে সেক্ষেত্রে পানীয় জলের জন্য আলাদাভাবে শুল্ক নেবে রাজ্য। যদিও শুল্ক নেওয়ার পক্ষে নয় তৃণমূল কংগ্রেস।
অন্যদিকে, বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ বরাবরই তুলে আসছে তৃণমূল কংগ্রেস। ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনার মতো প্রকল্পে কেন্দ্র অর্থ দিচ্ছে না বলে বহু তৃণমূল নেতা সরব হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ নিয়ে একাধিক বার অভিযোগ তুলেছেন। এদিন কেন্দ্রীয় বঞ্চনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী পুলক রায় নাম না করে বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘বহু নেতা কেন্দ্রকে চিঠি লিখে যাতে রাজ্যকে টাকা না দেওয়া হয় তার চেষ্টা চালাচ্ছে।’ তবে জনস্বাস্থ্য এবং কারিগর দফতরের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় অর্থ পেতে অসুবিধা হয়নি বলে দাবি করেছেন মন্ত্রী পুলক রায়।