জানুয়ারি মাসের মধ্যে নিজের কেন্দ্রের ৭০ হাজার বঞ্চিতর কাছে বার্ধক্যভাতা পৌঁছে দিতে তৎপর হয়েছেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় সাংবাদিক বৈঠক করে অভিষেকের এই উদ্যোগকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করালেন শুভেন্দু অধিকারী। বললেন, ভাইপোকে জেতাতে হবে। তাই রাজ্যের ২ লক্ষ ২০ হাজার বার্ধক্যভাতা মধ্যে ৭০ হাজারই বরাদ্দ হয়েছে ডায়মন্ড হারবারের জন্য।
এদিন শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘বার্ধক্যভাতা প্রকল্প চালায় ভারত সরকার। চালু করেছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী। নরেন্দ্র মোদীর সরকার তার অংক ১০০০ টাকা করেছে। এর মধ্যে ৮০০ টাকা দেয় কেন্দ্র। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে পর্যন্ত রাজ্যে ১২ লক্ষ ৬৪ হাজার মানুষ বার্ধক্যভাতার জন্য আবেদন করেছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার বিডিওদের দিয়ে, তার মধ্যে আবার ৫০ – ৬০টা বিডিও ভুয়ো বিডিও। সেই বিডিওদের দিয়ে সমীক্ষা করানোর পরে দেখা যায় ২ লক্ষ ২০ হাজার বার্ধক্যভাতা শূন্যপদ তৈরি হয়েছে। তার মানে ১২ লক্ষ ৬৫ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। তার মধ্যে ২ লক্ষ ২০ হাজারকে আমি ভাতা দিতে পারব। তাহলে কী করতে হবে, ২০২১এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে যেটা দিদিকে বলো নম্বর ছিল। সেই একই নম্বর এখন করেছে মুখ্যমন্ত্রীকে বলো। আইপ্যাকের প্রশান্ত কিশোর মুখ্যমন্ত্রী হবে বলে বিহারে ঘুরছে। তার যে সেকেন্ড ম্যান প্রতীক জৈনকে ১৬০ কোটি টাকায় টেন্ডার দিয়েছে ২ বছরের। এটা আমাদের করের টাকা'।
শুভেন্দুর দাবি, 'এই আইপ্যাকের ছোকরাগুলো যারা এখন বেতনভুক হয়েছে এবং তৃণমূলের যতগুলো চোর চিটিংবাজ আছে তারা মুখ্যমন্ত্রীকে বলোর ফোন নম্বরে ফোন করিয়ে বার্ধক্যভাতার নাম নথিভুক্ত করাচ্ছে। জানুয়ারি মাসে একসঙ্গে ৩ মাসের টাকা দেবে। যে সরকারের ৮০ শতাংশ কেন্দ্রীয় সরকারের ২০ শতাংশ রাজ্য সরকারের। ২ লক্ষ ২০ হাজার আবেদনকারীকে তৃণমূল বেছে নিয়ে আসবে। ১০ লক্ষ ৪৫ হাজার বার্ধক্যভাতার আবেদনকারীকে বঞ্চিত করে ২ লক্ষ ২০ হাজারকে ভাতা দেওয়া হবে। যেহেতু ভাইপোই রাজ্য চালাচ্ছে, পরিবার রাজ্য চালাচ্ছে, তাই ২ লক্ষ ২০ হাজারের মধ্যে ৭০ হাজারই ডায়মন্ড হারবারের লোক পাবে। যেমন রাস্তাশ্রীতে গোটা পশ্চিমবঙ্গে ১১ হাজার রাস্তা অনুমোদন হয়েছিল। তার মধ্যে শুধু ডায়মন্ড হারবারেই ৩ হাজার রাস্তা হয়েছে। ভাইপোকেই জেতাতেই হবে’।
জানা গিয়েছে, ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ডায়মন্ড হারবারে বার্ধক্যভাতা থেকে বঞ্চিত ৭০ হাজার মানুষের কাছে বার্ধক্যভাতা পৌঁছে দিতে চান অভিষেক। সেজন্য বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করেছে তিনি। লোকসভা কেন্দ্রে ২০৩টি শিবির করবেন তাঁরা। সেই শিবিরে গ্রহণ করা হবে বার্ধক্যভাতার আবেদন। কেউ শিবির পর্যন্ত পৌঁছতে না পারলে তাঁকে বাড়ি গিয়ে কাগজে সই করাবেন স্বেচ্ছাসেবকরা। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রত্যেককে ভাতা পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন অভিষেক। কেউ না পেলে তাঁকে আর্থিক সাহায্য করবেন তিনি।