কলকাতা হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করার পরেই ফের কামদুনি কাণ্ডে নিয়ে তোলপাড় হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। নিম্ন আদালতে দোষীরা শাস্তি পেলেও কলকাতা হাইকোর্টে দোষীদের সাজা লঘু হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য। তবে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে শুনানির পরেই এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সর্বোচ্চ আদালত। এদিকে, নির্যাতিতার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস। এবার এনিয়ে আরও সক্রিয় হল বিজেপি। নির্যাতিতার পরিবারকে সবরকম আইনি লড়াইয়ে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিল বিজেপি।
আরও পড়ুন: কামদুনি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট
সোমবার কামদুনি কাণ্ডে নির্যাতিতা কলেজ ছাত্রীর বান্ধবী মৌসুমী কয়াল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দেখা করেন। তিনি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা কাছে সাহায্যের আর্জি জানান। তার ভিত্তিতে তাদের সবরকমের সাহায্য দেওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন শুভেন্দু অধিকারী। একই সঙ্গে এই ঘটনায় আজ মঙ্গলবার বিজেপির মহিলা মোর্চার কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছেন তিনি । এনিয়ে আগামী দিনে বিজেপি আরও বড় কর্মসূচি করবে বলে জানিয়েছেন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পাণ্ডা। একই সঙ্গে তিনি রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ, রাজ্য সরকার নাটক করছে। তারা লোক দেখানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। বিজেপির বক্তব্য, সিআইডির গাফিলতির কারণে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। কামদুনির নির্যাতিতার পরিবারকে সব রকমের আইনি সহায়তা এবং অন্যান্য সহায়তা করা হবে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২৭ জুন কামদুনিতে কলেজছাত্রীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নৃশংসভাবে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ঘটনার তদন্তভার নিয়েছিল সিআইডি। মামলা চলে নিম্ন আদালতে। এরপর ২০১৬ সালে রায় ঘোষণা করে নিম্ন আদালত। ৩ অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন এবং ৩ অভিযুক্তের ফাঁসির সাজা শুনিয়েছিল নিম্ন আদালত। পরে অভিযুক্তদের পরিবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। গত ৬ অক্টোবর সেই সংক্রান্ত মামলায় রায় ঘোষণা করে হাইকোর্ট। তাতে ফাঁসি সাজা প্রাপ্ত দুজনের আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট, আর একজন বেকসুর খালাস পেয়েছেন। অন্যদিকে, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত তিন অভিযুক্তকে জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট। এক্ষেত্রে সিআইডির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে মৌসুমী কয়াল এবং টুম্পা কয়াল। তাঁদের দাবি, সিআইডি যে চার্জশিট পেশ করেছিল সেই চার্জশিটের সঙ্গে নিম্ন আদালতে পেশ করা চার্জশিটের মিল ছিল না। সেই কারণে অভিযুক্তরা জামিন পেয়েছে।