স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে জনতাকে দেওয়া কার্ড নিয়ে কিছু বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোম দুর্নীতি করছে বলে অভিযোগ। এই অনিয়ম ঠেকাতে এবার কড়া পদক্ষেপের পথে হাঁটতে চলেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর চালু করা এই বিনামূল্যে বিমা প্রকল্পের সুযোগ নিয়ে চিকিৎসার নামে বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম বেআইনিভাবে সরকারি টাকা লুট করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেটা ঠেকাতেই এই প্রকল্পে নজরদারির জন্য এবার দক্ষ পেশাদার নিয়োগ করতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তারাই এই প্রকল্পের কাজ মনিটরিং করবে।
নবান্ন সূত্রে খবর, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে অনিয়ম–দুর্নীতি ঠেকাতে প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ এবার থেকে কাজ করবে। এই প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্ট ইউনিট পরিচালনা করবে বেসরকারি এজেন্সি। প্রকল্পে অর্থ নয়ছয় রুখতে তারা স্টেট নোডাল এজেন্সিকে সহযোগিতা করবে। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে জালিয়াতি করে টাকা নেওয়া যাতে না যায় সেই কাজ করবে তারা। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, দুর্নীতি বন্ধ করতে অ্যান্টি ফ্রড অফিসার নিয়োগ করা হবে। যাঁদের প্রধান কাজ হবে, প্রকল্পে কেমন অনিয়ম হচ্ছে সেটা খুঁজে বের করা এবং বন্ধে করা। দুর্নীতি ধরতে তাঁরা বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমে যাবেন। অনিয়ম বুঝলেই তদন্ত করে তাঁরা দেখবেন।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ২৪ জন সদস্যের এই টিম দুর্নীতি রুখতে কাজ করবে। অ্যান্টি ফ্রড অফিসার হওয়ার ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা রাখা হয়েছে স্ট্যাটিসটিক্স বা ইকনমিক্স অথবা ডেটা অ্যানালিটিক্সে মাস্টার ডিগ্রি। কর্পোরেট আইন সম্পর্কেও জ্ঞান থাকতে হবে। কোনও ব্যাঙ্ক অথবা ফিনান্সিয়াল কোম্পানি, বিমা কোম্পানিতে কম করে পাঁচ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকাতে হবে এই পদে কাজ করতে গেলে। নিয়মিত স্বাস্থ্য সাথী সম্পর্কে রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। চিকিৎসার প্যাকেজ ঠিক করতে মেডিক্যাল উইংয়ের অধীনে এক্সিকিউটিভও নিয়োগ করা হবে।
আরও পড়ুন: গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নান করে ফেরার পথে বিপত্তি, নামতে হল উপকূলরক্ষী বাহিনীকে
এছাড়া মানুষ যাতে বেশি করে সুবিধা পায় চিকিৎসা ক্ষেত্রে তা দেখতে হবে। ন্যূনতম গ্র্যাজুয়েট হতে হবে এই কাজে যুক্ত হতে গেলে। বিমা অথবা মেডিক্যাল শাখায় দু’বছরের কাজের অভিজ্ঞতা অগ্রাধিকার দেবে। যে সব হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে স্বাস্থ্য সাথী স্কিমে চিকিৎসার সুবিধা আছে, সেখানে নিয়মিত পরিদর্শন করতে হবে। এটা করবে বেসরকারি এজেন্সির ফিল্ড অডিটররা। ২০১৬ সালে এই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প রাজ্যের মানুষের জন্য চালু করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসায় সাহায্য পাচ্ছেন রাজ্যের মানুষজন। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে যাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসা করাচ্ছেন, তাঁদের বিলের পরিমাণ বাড়িয়ে দেখানো হচ্ছে। টিপিএ সংস্থার কর্মীদের একাংশ এই কাজে জড়িত। তাই এখন থেকে টিপিএ সংস্থা থেকে কোনও বিল পাঠানো হলে যাচাই করা হবে। বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে আলাদা ক্লেমস অফিসার নিয়োগ হবে।