রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস কি মানসিক অশান্তিতে আছেন? এই প্রশ্ন এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে রাজ্য–রাজনীতিতে। কারণ সন্দেশখালি কাণ্ড নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সোমবার নতুন করে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আর সেই অসন্তোষ মানসিক অশান্তির কারণ বলে মনে করেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। গোটা বিষয়টি নিয়ে রাজ্যপালের উদ্দেশে তীব্র কটাক্ষ করে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘রাজ্যপাল মানসিক অশান্তিতে রয়েছেন। তাই তাঁর মুখ দিয়ে হতাশা বেরিয়ে পড়ছে।’ এই মানসিক অশান্তির কারণ কী? রাজ্য–রাজনীতিতে এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে কুণাল সবটাই জানিয়েছেন।
মানসিক অশান্তি রাজ্যপালের হল কেন? সন্দেশখালিতে গিয়ে ইডি অফিসার থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা মারধর খাবেন তা কেউ ভাবতে পারেননি। তার উপর এখনও ধরা যায়নি শেখ শাহজাহানকে। বারবার সুর চড়িয়ে রাজ্যপালের লাভ হয়নি। এমন আবহে কুণাল ঘোষের দাবি, ‘রাজ্যপাল যাঁকে অপমান করে তাড়িয়েছিলেন, সেই বাঙালি মহিলা আমলাই এখন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে স্বরাষ্ট্রসচিব পদে নিয়োগ করেছেন। তাঁকে ডেকেই এখন রাজ্যপালকে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনা করতে হচ্ছে। তাই তাঁর মানসিক অশান্তি হওয়া স্বাভাবিক।’ সম্প্রতি সন্দেশখালি কাণ্ডে রাজ্যপাল তলব করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকা ও স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তীকে।
তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক নেতা কুণাল ঘোষের কথায় এটাই রাজ্যপালের মানসিক অশান্তির কারণ। কারণ আগে নন্দিনী চক্রবর্তী রাজ্যপালের প্রধান সচিব ছিলেন। ২০২৩ সালের সরস্বতী পুজোর সময়ও রাজ্যপালের সচিব পদে ছিলেন নন্দিনী। তার পরেই রাজ্যপালের মনে হয়েছে, রাজ্য সরকারের হয়ে কাজ করছেন নন্দিনী চক্রবর্তী। আর রাজভবনের কথা নবান্নে পৌঁছে দিচ্ছেন। এই মনে হওয়া থেকেই নন্দিনী চক্রবর্তীকে সরিয়ে দেন রাজ্যপাল। যার কোনও উপযুক্ত প্রমাণ মেলেনি। আর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলাদের প্রতি দরদী। সুতরাং সেই নন্দিনী চক্রবর্তীই এখন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব। আর এই কারণেই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের মানসিক অশান্তি বলে কটাক্ষ কুণাল ঘোষের।
আরও পড়ুন: এই মামলার সঙ্গে বৃহত্তর স্বার্থ জড়িয়ে আছে, প্রাথমিকের একটি মামলা ছাড়লেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
আর সন্দেশখালি কাণ্ডে সোমবার পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে মূল অভিযুক্ত অধরা। তাও দু’সপ্তাহ হয়ে গেল। এই বিষয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেছেন, ‘কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানি। কিন্তু মূল অভিযুক্ত এখনও অধরা। তাই আমি অসন্তোষ প্রকাশ করছি।’ এই অসন্তোষ নাকি মানসিক অশান্তির কারণ। আর তা থেকেই রাজ্যপালের মুখ থেকে বেরিয়ে আসছে হতাশা। এমনই তথ্য দিয়েছেন কুণাল ঘোষ। আর তা নিয়েই এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। যদিও রাজ্যপাল এই নিয়ে কোনও কথা বলেননি। মকর সংক্রান্তিতে রাজ্য–রাজনীতিতে এটাই বড় আলোচ্য বিষয় হয়ে ওঠে।