অযোধ্যায় রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা একদিকে আর অপরদিকে আজ কলকাতায় সংহতি মিছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কালীঘাট মন্দিরে পুজো দিয়ে পথে নামেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গুরুদ্বার, গির্জা, মসজিদ ঘুরে পার্কসার্কাস মোড়ে শেষ হয় মিছিল। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ছিলেন বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধিরা। যাঁরা আজ কলকাতায় মমতার ডাকে সর্বধর্ম সমন্বয়ের মিছিলে হেঁটেছেন। আসলে এটাই তো দেশের আসল ছবি। ঘড়ির কাঁটা তখন ৫টা বেজে একটু এগিয়েছে। মাইকের সামনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই কানে ভেসে এল আজানের সুর। বক্তব্য থামালেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ। সংহতির সভায় সংহতি দেখিয়ে দিলেন। যা চাক্ষুষ করল বাংলার মানুষজন।
এদিকে এই সভামঞ্চ থেকে বার্তা দিলেন অভিষেক। আর নাম না করে অভিষেক নিশানা করলেন বিজেপিকে। তাঁর বার্তা, ‘আমরা ধর্মকে সামনে রেখে রাজনীতি করি না। তৃণমূল সরকার ধারাবাহিকভাবে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছে। রাস্তার টাকা, আবাসের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। রাজ্য থেকে ৪ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্র তুলে নিয়েছে। ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমার কোনও ধর্ম নেই। আমার একটাই ধর্ম মানব ধর্ম। মানুষকে পরিষেবা দেওয়াই আমার কাজ। যাকে ইচ্ছে ভোট দেবেন। কিন্তু ধর্মের নামে নয়, কর্মের নামে ভোট দিতে হবে।’ পার্কসার্কাস মোড়ে বক্তব্যের মাঝে মসজিদ থেকে আজানের সুর শুনে বক্তব্য থামিয়ে দেন অভিষেক। তার পর দ্রুতই শেষ করেন নিজের কথা।
অন্যদিকে গণতন্ত্রে মানুষই যে শেষ কথা বলে সেটা দাবি করেছেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘দিনটি আপনাদের কাছে অবশ্যই গর্বের। কারণ গোটা দেশে যখন ধর্মের নামে অস্ত্রের ঝনঝনানি চলছে, তখন বাংলায় সব ধর্মের ঐক্য সংহতি দেখিয়েছে। রাজনীতি যখন করব তখন মানুষের রোটি–কাপড়া–মকান নিয়ে করব। গা জোয়ারি করে একুশের নির্বাচনে জিততে পারেনি। তাই বাংলার মানুষের সঙ্গে বঞ্চনা করছে। যে সমস্ত রাজনৈতিক দল সম্মান অর্জন করতে পারে না, তারা ধর্মের নামে ভোট চায়। মানুষের হৃদয়ে তারা প্রতিপত্তি প্রভাব খাটাতে পারেনি। আমি হিন্দু। সেই ধর্মাচরণ আমি বাড়িতে পালন করব। কিন্তু মানুষকে পরিষেবা দেব মানব ধর্ম দিয়ে। মানুষকে ভুল বুঝিয়ে একটা রাজনীতি চলছে। ভোট ধর্মের নামে নয়, কাজের নামে, ১০০ দিনের টাকার নামে ভোট দিতে হবে।’
আরও পড়ুন: কলকাতা পুলিশের কড়া নজরে এবার ওয়ো রুম, সঙ্গী নিয়ে যাবেন ভাবছেন? জানুন বিশদে
এছাড়া তৃণমূল কংগ্রেস বিভাজনের বার্তা কোনওদিন দেয়নি। বরং একতার বার্তা দিয়েছে বলে জানান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘আমরা দুর্গাপুজোর সময় ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে আনন্দ করি। তেমনই ঈদের সময়ও আনন্দ করি। রমজানে যদি রাম থাকে আর দিওয়ালিতে যদি আলি থাকে, তাহলে কেন দুই সম্প্রদায়ের মানুষ এক হয়ে থাকতে পারবে না? আমার ধর্ম আমায় বিভাজন শেখায়নি। সবাই মিলে এক হয়ে থাকতে শিখিয়েছে। কেউ বলছেন, হিন্দুরা বিপদে। কেউ বলছেন, মুসলমানরা বিপদে। আমি বলছি, ধর্মের চশমাটা খুলে দেখুন, গোটা হিন্দুস্তানই বিপদে রয়েছে।