বেসুরো গেয়ে উঠেছিলেন তিনি। তা নিয়ে দলের সাংসদরা সরাসরি সরে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন তাঁকে। যদিও তাতে শ্লেষ ছিল। পাল্টা তিনি তৃণমূল সুপ্রিমোর ইচ্ছেকেই প্রাধান্য দিতে চান বলে বার্তা দিয়েছিলেন। হ্যাঁ, তিনি রাজ্যসভার তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ জহর সরকার। যাঁর ‘আচরণের’ জেরে এবার তাঁকে দ্রুত ‘সম্মানজনক বিচ্ছেদের’ পথ বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হল দলের তরফে বলে সূত্রের খবর। আর তা নিয়েই এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? সূত্রের খবর, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জহরের বেসুরো মন্তব্য নিয়ে কথা বলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল রাজ্যসভায় দলের সচেতক সুখেন্দুশেখর রায়কে। তিনি ইতিমধ্যেই জহরের সঙ্গে কথা বলে দলের বার্তা জানিয়ে দিয়েছেন। তাতে সম্মান বজায় রেখে তাঁকে সরে যেতে বলা হয়েছে। যদিও সুখেন্দুশেখর বা জহর কেউ এই নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। জহর সরকার কোনও দলীয় পদে না থেকেও তৃণমূল কংগ্রেসের বিড়ম্বনা বাড়িয়েছেন। তাই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল। দু’দিন আগে জহর জানান, মমতা বললে তিনি পদত্যাগ করে চলে যাবেন।
ঠিক কী বলেছিলেন জহর সরকার? জহরবাবু সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ঘটনা যখন প্রথমে টিভিতে দেখলাম বিশ্বাসই করতে পারিনি। কারও বাড়ি থেকে এত টাকা–রসদ বেরোতে পারে আমার কাছে কল্পনাতীত। সে যে দলেরই হোক, এরকম দুর্নীতির দৃশ্য টিভিতে কম দেখা যায়। এই নিয়ে লোকে মন্তব্য করবেই। লোকের মুখ তো বন্ধ করা যায় না। টাকা উদ্ধারের ছবি টিভিতে দেখে বাড়ির লোকেরা বলল, তুমি ছেড়ে দাও। সাংসদ পদ তো বটেই, রাজনীতিও। বন্ধুরা টিপ্পনি কাটল। হোয়াটসঅ্যাপে কত রকম জোক পাঠাল। বলল, তুই এখনও আছিস? কত পেয়েছিস?’
আর কী জানা যাচ্ছে? তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর, জহরকে যত দ্রুত সম্ভব সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। তিনি সম্মানজনকভাবে বিচ্ছেদের পথ বেছে নিলে সেটি তাঁর পক্ষেও ভাল, দলেরও তাতে মঙ্গলজনক। দীনেশ ত্রিবেদীর ছেড়ে যাওয়া রাজ্যসভার আসনে ২০২১ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে সাংসদ হন জহর সরকার। প্রসার ভারতীর প্রাক্তন এই কর্তা বরাবরই বিজেপি বিরোধী স্পষ্টবক্তা হিসাবে পরিচিত।