সম্প্রতি শিয়ালদহ উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছে বিশেষজ্ঞরা। তা নিয়ে রিপোর্টও জমা দিয়েছে ওই বিশেষজ্ঞ সংস্থা। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, এই উড়ালপুল বাঁচাতে গেলে সেখান থেকে অবিলম্বে ট্রাম লাইন তুলে দিতে হবে। তাছাড়া, উড়ালপুলের উপরের অংশ খারাপ হলে পুরনো পিচের ওপর নতুন পিচের প্রলেপ দেওয়া যাবে না। কারণ সেই ভার বহন করতে পারবে না ওই উড়ালপুল। তাই পুরনো পিচের আচরণ তুলে দিয়ে নতুন পিচ দিতে হবে। উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পর কেএমডির কাছে এমনই রিপোর্ট জমা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞসংস্থা।
আরও পড়ুন: মেট্রোর সুড়ঙ্গের কাজের জন্য আজ, শুক্রবার থেকে তিনদিন বন্ধ শিয়ালদহ উড়ালপুল
পোস্তা উড়ালপুল ভেঙে পড়ার পরেই শহরের অন্যান্য সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেএমডিএ। সেই মতো বিভিন্ন সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। প্রথমে কেএমডিএ’র ইঞ্জিনিয়াররা শিয়ালদহ উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছিলেন। তাঁরা অবশ্য রিপোর্টে জানিয়েছিলেন এই উড়ালপুলের স্বাস্থ্য ঠিক আছে। তবে তারপরেও অন্য একটি সংস্থাকে এই উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওই সংস্থা তরফে উড়ালপুলে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে হ্যামারিং টেস্ট, ইউপিডি, কোর কাটিং, করোশন টেস্ট, টোপোগ্রাফি টেস্ট, স্ক্যানিং এবং লোড ক্যাপাসিটি বা ভারবহন ক্ষমতা পরীক্ষা। সেগুলি খতিয়ে দেখার পরে রিপোর্ট জমা দেয় ওই বিশেষজ্ঞ সংস্থা। তাদের মতে, বয়সের কারণে এমনিতেই শিয়ালদহ উড়ালপুল দুর্বল হয়ে গিয়েছে। তার ওপর প্রতিদিনই এই উড়ালপুলের উপর দিয়ে ভারী জান চলাচল করে। তাছাড়া এর উপরে রয়েছে ট্রাম লাইন এবং পুরু পিচের প্রলেপ। বর্তমানে এই উড়ালপুলের ভার বহন ক্ষমতা ৭১ টনের বেশি। তবে এই উড়ালপুল বাঁচাতে গেলে ট্রাম লাইন তুলে ফেলার পাশাপাশি পুরনো পিচের আস্তরণ তুলে নতুন পিচের প্রলেপ দিতে হবে বলে জানিয়েছে বিশেষজ্ঞ সংস্থা।
তাছাড়া, এই উড়ালপুলের গার্ডার এবং জয়েন্টগুলি অনেক পুরনো। ফলে সেগুলি পরিবর্তন করা দরকার বলে মনে করছে এই সংস্থা। শিয়ালদহ উড়ালপুল নিয়ে সম্প্রতি কেএমডিএ’র আধিকারিকরা বৈঠক করেছেন তাতে এই সমস্ত বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। শেষে সিদ্ধান্ত হয়েছে ট্রাম লাইন তুলে দেওয়ার জন্য পরিবহণ দফতরের কাছে আর্জি জানানো হবে। কারণ এই লাইনে ট্রাম চলাচল দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে সেক্ষেত্রে ট্রাম লাইন রাখার কোনও মানে হয় না বলে মনে করছেন আধিকারিকরা। সে ক্ষেত্রে পরিবহণ দফতরের ছাড়পত্র মিললেই ট্রাম লাইন সরানোর কাজ শুরু করবে কেএমডিএ।